বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণের দুই অভিযুক্ত কাঁথিতে গ্রেপ্তার
১২ এপ্রিল ২০২৪গত ১ মার্চ বেঙ্গালুরুর ক্যাফেতে বিস্ফোরণে ১০ জন আহত হন। সেই বিস্ফোরণের সূত্রেই দুই প্রধান অভিযুক্তকে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের যৌথ দল গ্রেপ্তার করলো। অভিযুক্তরা তারা কাঁথিতে লুকিয়েছিল।
এই দুই অভিযুক্তের নাম মুসাভির হুসেন শাজেব ও আব্দুল মাতিন তাহা। দুজনেই কর্ণাটকের বাসিন্দা। শাজেব বিস্ফোরকভর্তি ব্যাগ ক্যাফেতে রেখে এসেছিল এবং আব্দুল পুরো পরিকল্পনা করেছিল এবং কীভাবে পালাবে, সেই ছক কষেছিল।
তদন্তকারী দল গতমাসে মোজাম্মিল শরীফকে এই বিস্ফোরণের সূত্রে গ্রেপ্তার করে। সে ওই দুই অভিযুক্তকে সাহায্য করেছিল।
শাজেব ও আব্দুলের খোঁজে তদন্তকারীরা কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, ও উত্তরপ্রদেশের মোট ১৮টি জায়গায় তল্লাশি করে। তারপর তাদের কাঁথি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এনআইএ জানিয়েছে, দুই অভিযুক্ত ৪২ দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় থেকেছে।
ক্যাপের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, শাজেব মুখে মাস্ক পরে পিঠে ব্যাগ নিয়ে ঢুকছে। সে বিস্ফোরক ভর্তি ব্যাগটি রেখেছিল, তুলনামূলকভাবে খালি জায়গায়, একটি থামের পাশে। বিস্ফোরণের পর সেই থামটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরকের তীব্রতা কিছুটা কম থাকায় কেউ মারা যাননি।
তবে ক্যাফেটি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আটদিন পর তা আবার খোলে। এখন সেখানে মেটাল ডিটেক্টর লাগানো হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
এনআইএ ঘোষণা করেছিল, এই ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারলে ১০ লাখ টাকা দেয়া হবে। এনআইএ ভারতের সব ছোট শহরে বেসরকারি লজ বা হোমস্টের উপর নজর রাখে। শেষ পর্যন্ত তাদের পশ্চিমবঙ্গ থেকে ধরা হয়।
তাদের কলকাতায় নিয়ে এসে ব্যাংকশাল কোর্টে তোলা হয়।
রাজনৈতিক চাপানউতোর
এই ঘটনার পরেই তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গেছে। বিজেপি নেতা অমিত মালবীয় টুইট করে বলেছেন, ''দুর্ভাগ্যবশত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গিদের নিরাপদ স্বর্গে পরিণত হয়েছে।''
পরে কোচবিহারে জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ''লোকগুলি তো এখানকার নয়, কর্নাটকের। পশ্চিমবঙ্গে দুই'ঘণ্টা লুকিয়ে ছিল। আমরা তো দুই ঘণ্টার মধ্যে ধরে দিয়েছি। ওরা বলছে, বাংলা সেফ নয়। তোমাদের দিল্লি সেফ? উত্তর প্রদেশ সেফ? গুজরাট সেফ? বাংলার মানুষ শান্তিতে থাকে, সেটা ওদের সহ্য হয় না।''
বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ''আমরা তো অনেকদিন ধরেই বলছি, পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গি ও অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য।''
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ''কোথা থেকে দুষ্কৃতীদের ধরা হলো। কাঁথি। সবাই জানে সেখানে কোন পরিবার দুষ্কৃতীদের আনে, আশ্রয় দেয়। এসবে তাদের ভূমিকার তদন্ত হোক।''
মালবীয় বলেছেন, ''এনআইএ দুষ্কৃতীদের ধরেছে। কিন্তু রাজ্য পুলিশ দাবি করেছে, এটা যৌথ অভিযান ছিল। পুলিশও তাতে ছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ‘‘রাতে আমাদের কাছে খবর আসে। সঙ্গে সঙ্গে সব পরিকল্পনা করে ফেলি। দুই'ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয় দুই অভিযুক্তকে। রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যৌথ ভাবে এই অভিযান চালিয়েছে।''
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)