বেঁধে দেয়া সময় শেষেও জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনে
মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সেই সময় আন্দোলনেই দেখা গেল তাদের।
কাজে যোগ না দিয়ে প্রতিবাদে
সুপ্রিম কোর্টের দেয়া সময় পেরিয়ে গেল। কাজে যোগ দিলেন না জুনিয়র ডাক্তাররা। বিকেল পাঁচটায় তাদের দেখা গেল স্বাস্থ্যভবনের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে। বিধাননগরে স্বাস্থ্যভবনের রাস্তায় পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে তারা বসে পড়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রতীকী মস্তিষ্ক
লালবাজার অভিযানে জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে ছিল প্রতীকী মেরুদণ্ড। এবার স্বাস্থ্যভবন অভিযানে তাদের হাতে দেখা গেল প্রতীকী মস্তিষ্ক। জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এই মস্তিষ্ক তারা স্বাস্থ্যসচিবকে দেবেন। তারা বলবেন, চিকিৎসকদের আন্দোলন নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম দূর করায় মাথাটা কাজে লাগাতে।
ছিল ঝাঁটাও
জুনিয়র চিকিৎসকদের হাতে ছিল ঝাঁটা। ঝাঁটা যাবতীয় অনিয়ম, দুর্নীতি, অন্যায় ঝেঁটিয়ে বিদায় করার প্রতীক। অন্যায়ের সাফাই অভিযানে নেমেছেন বলে জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
ছয়টি দাবি
জুনিয়র ডাক্তাররা ছয়টি দাবি নিয়ে এই অভিযান করেছেন। তাদের দাবির মধ্যে আছে, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, পুলিশ কমিশনারকে ইস্তফা দিতে হবে। অপরাধের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের শাস্তি দিতে হবে। যারা তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে চেয়েছিল, তাদের শাস্তি দিতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সব হাসপাতালে ভয়মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
দাবি পূরণ না হলে
আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, তাদের দাবিপূরণ হলেই তারা কাজে ফিরে যাবেন। না হলে ওখানেই অবস্থান করবেন। তারা বলেন, বল এখন রাজ্য সরকারের কোর্টে। তারা দাবি মেনে নিক, ব্যবস্থা নিক, জুনিয়র ডাক্তাররাও কাজে ফিরবেন।
জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল
বিধাননগরের করুণাময়ী থেকে স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত মিছিল করে যান জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রচুর জুনিয়র ডাক্তার মিছিল করে স্বাস্থ্যভবনের একশ মিটার দূরে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে বসে পড়েন।
পিছিয়ে গেল পুলিশ
পুলিশ আগে স্বাস্থ্যভবন থেকে অনেকটা দূরে ব্যারিকেড তৈরি করেছিল। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, তারা স্বাস্থ্যভবনের কাছে যেতে চান। যেমন, তারা লালবাজারের কাছে যেতে চেয়েছিলেন। ২২ ঘণ্টা পরে সেই দাবি মানা হয়েছিল। এবার আগে থেকেই তাদের দাবি মানার অনুরোধ করা হয়। পুলিশ সেই দাবি মেনে নেয়।
মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান প্রত্যাখ্যান
একদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, একমাস হয়ে গেছে, এবার সকলে পুজোয় ফিরুন- উৎসবে ফিরুন। মুখ্যমন্ত্রীর এই অনুরোধ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তারা বলেছেন, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তারা উৎসবে ফিরবেন না।
সন্দীপ ঘোষ সিবিআই হেফাজত থেকে জেলে
মঙ্গলবার সন্দীপ ঘোষ-সহ চারজনকে আর তাদের হেফাজতে চাইলো না সিবিআই। ২৩ তারিখ পর্যন্ত তাদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সিবিআইয়ের আইনজীবী মঙ্গলবার বলেন, তাদের আটদিনের জেরা শেষ হয়েছে। এবার তারা ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করতে চান। বিচারক বলেন, ''এখন থেকেই কি সিবিআই ঠিক করতে চাইছে, ভবিষ্যতে আমরা কী রায় দেবো? এটা আমি হতে দেবো না। তখন কী পরিস্থিতি হবে, সেই অনুযায়ী নির্দেশ দেবো।''
সন্দীপদের বিরুদ্ধে নারী আইনজীবীরা
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন নারী আইনজীবীরা। সন্দীপ ঘোষকে যখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরায় পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন তারা স্লোগান দিতে থাকেন। তারা অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের ধাক্কা দিয়ে আদালত থেকে বের করে দিয়েছে। অনেকক্ষণ ধরে স্লোগান দেন নারী আইনজীবীরা।
ময়নাতদন্ত নিয়ে চা়ঞ্চল্যকর তথ্য
আরজি করে ধর্ষিতা ও খুন হওয়া চিকিৎসকের দেহের ময়নাতদন্ত করার ক্ষেত্রে আপত্তি তুলেছিলেন ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক রিনা দাস। তিনি ছিলেন ময়না তদন্তের ক্ষেত্রে তিন সদস্যের দলের একজন। তিনি স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি নির্দেশের কথা তুলে লিখিতভাবে বলেছিলেন, বিকেল চারটের পর ময়নতদন্ত করতে গেলে পুলিশের অনুমতি দরকার। তার অল্প সময়ের মধ্যে টালা থানার অনুমতি এসে যায়।