বৃহত্তম ফেস রিকগনিশন ডেটাবেস করছে ভারত
৯ নভেম্বর ২০১৯অধিকারকর্মী এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা গোপনীয়তার ঝুঁকি এবং বাড়তি নজরদারির এই উদ্যোগ নিয়ে সমালোচনা করলেও ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত জাতীয় অপরাধ রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) এই সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে৷ এজন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাছ থেকে দরপত্রও চেয়েছে তারা৷
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, অল্প পুলিশের দেশটিতে এই প্রযুক্তিটি বিশেষ প্রয়োজন৷ জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, ভারতে প্রতি এক লাখ মানুষের জন্য ১৪৪ জন পুলিশ রয়েছেন৷
আর এনসিআরবি বলছে, পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকীকরণ এবং সহজে তথ্য সংগ্রহ, অপরাধ সনাক্ত ও যাচাইকরণের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে৷
বাহিনীতে সীমিত জনবল এবং পর্যাপ্ত অর্থের যোগান না পাওয়ায় ভারতীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ফৌজদারি মামলা দ্রুত শেষ করতে প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান খুঁজছিল৷
এনসিআরবি বলছে, ফেস রিকগনিশন সিস্টেমের মাধ্যমে অপরাধী, হারানো শিশু বা ব্যক্তির খোঁজ করা, অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ সনাক্ত ছাড়াও পরিচয়হীন মানুষদের সনাক্ত করা হবে৷ এছাড়া অপরাধীদের ছবির ডাটাবেসও করা হবে৷ আর একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তারা অপরাধীদের তালিকার সঙ্গে সন্দেহভাজনদের মিলিয়ে দেখতে পারবেন৷
ডাটাবেসে সোশাল মিডিয়া, সংবাদপত্র, সিসিটিভি ক্যামেরা, পাসপোর্ট, প্রকাশ্যস্থান, অপরাধমূলক রেকর্ড থেকে ছবি যুক্ত করা হবে৷ এছাড়া সন্দেহভাজনদের আঁকা স্কেচগুলোও সেখানে রাখা হবে৷
গত জুলাই মাসে ভারতের কয়েকটি বিমানবন্দরে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল৷ এর কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় তিন হাজার নিখোঁজ শিশুদের সনাক্ত করার কথা জানায় দিল্লি পুলিশ৷
তবে সরকারের এই উদ্যোগ নিয় মানবাধিকারকর্মী এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ তারা বলছেন, এই সিস্টেমটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে এবং এটি বাস্তবায়ন হলে কর্তৃপক্ষের জন্য বর্ধিত নজরদারি চালাতে সহজ হবে৷
ওপেন-ইন্টারনেট অ্যাডভোকেসি গ্রুপের পরিচালক রমন জিত সিং চিমা বলেন, "এ বিষয়টি তারা (এনসিআরবি) কোনো নীতিগত পরামর্শ ছাড়াই করছে এবং এনিয়ে কোনো নীতিমালাও নেই৷ তারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে কোন সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য নেই৷''
বাসুদেবান শ্রীধরন/এসআই/কেএম