বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ-এর বিবৃতিতে ইসরায়েল-গাজা সংঘাত নেই
১৬ অক্টোবর ২০২৩আইএমএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বৈঠকের উদ্বোধনী বক্তব্যে ইসরায়েল-গাজা সংঘাতের কথা উল্লেখ করেননি৷ তবে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা রোববার সমাপনীতে বলেন, ইসরায়েল-গাজা সংঘাত, ইউক্রেন যুদ্ধ ও আফ্রিকায় সংঘাত বৈঠকের সাফল্যের উপর ‘দীর্ঘ ছায়া' ফেলছে এবং অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ বাড়িয়েছে৷ ‘‘শান্তি ছাড়া মানুষের জন্য স্থিতিশীলতা, প্রবৃদ্ধি, সন্তানের দেখাশোনা করা, চাকরি পাওয়া কঠিন,'' বলেন তিনি৷
বৈঠক শেষে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ করতে পারেনি, যা বিশ্ব রাজনীতিতে বিভাজনের আরেক উদাহরণ৷ সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিবাদ নিয়েও এমন বিভাজন দেখা গেছে৷ জি-টোয়েন্টির এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, গতবছর নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠক হওয়ার পর ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া সম্ভব হয়েছিল৷ গতবছর ২৪ ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনের হামলা শুরু করেছিল৷ জি-টোয়েন্টির ঐ কর্মকর্তা মনে করেন, ‘‘ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত তার চেয়েও বেশি বিতর্কিত- ঐক্যমতে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব৷''
অবশ্য বৈঠকের সময় চলা অনানুষ্ঠানিক বিভিন্ন আলোচনায় এই সংঘাত আলোচনার কেন্দ্রে ছিল বলে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন৷ সংঘাতের ফলে নতুন করে শরণার্থী সংকট তৈরি হতে পারে কিনা, বিশ্ব বাণিজ্যের এর কী প্রভাব পড়তে পারে এবং লেবানন ও পশ্চিম তীরে সংঘাতের হুমকি কী হতে পারে, তা নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে৷ অ্যামেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন গবেষণা ফেলো ব়্যাচেল নাডেলমান মনে করছেন, ‘‘এই সংঘাতের মতো বড় এক বৈশ্বিক সংকটের সময়, যা মানব সৃষ্ট, কোনো ক্লাইমেট শক নয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো কিছু করতে অক্ষম৷ তাই তারা এটা নিয়ে কথাও বলছে না৷'' বার্ষিক বৈঠকের বিভিন্ন আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন নাডেলমান৷
বৈঠকে বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমান ঋণের বোঝা, মূল্যস্ফীতি আর দরিদ্র ও ধনী দেশগুলোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পদবৈষম্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সংকট মোকাবিলায় ভেস্তে যেতে বসা নানা উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে৷
আইএমএফ-এর সাবেক কর্মকর্তা জশ লিপস্কি, যিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাঙ্ক আটলান্টিক কাউন্সিলের জিওইকোনমিকস সেন্টারের পরিচালক, মনে করছেন, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত৷ তিনি মনে করেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর মতো প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতে নিজেদের প্রয়োজনীয় করতে রাখতে চাইলে এই ধরনের সংঘাতের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে৷ ‘‘ভূ-রাজনৈতিক ধাক্কা এখন অর্থনৈতিক ধাক্কা এবং অর্থনৈতিক ধাক্কা হলো ভূ-রাজনৈতিক ধাক্কা - এবং এটাকেই তারা বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে,'' বলেন তিনি৷
জেডএইচ/কেএম (রয়টার্স)