বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে দেশ কোথায়?
১১ জুলাই ২০১১জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে
সাম্প্রতিক আদমশুমারির ফল এখনও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হাতে এসে পৌঁছয়নি৷ কিন্তু তা' বলে তো আর পরিসংখ্যানের অভাব নেই৷ তারই ভিত্তিতে ভবিষ্যতের জনসংখ্যার একটা স্পষ্ট আন্দাজ পাওয়া যায়৷ যেমন ভোরের কাগজের প্রতিবেদকের বক্তব্য হল, স্বাধীনতার পর ৪০ বছরে দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে৷ তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি নতুন মুখ৷ জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর হিসেব অনুযায়ী দেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি বা তার বেশি৷ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ৷ এ হারে বাড়তে থাকলে আগামী ৫০ বছরে দেশের জনসংখ্যা আবার দ্বিগুণ হবে৷
জনসংখ্যা বৃদ্ধি তো সারা বিশ্বের সমস্যা৷ এবার জাতিসংঘের জনসংখ্যা দিবসের ‘মটো' হল, ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাট সেভেন বিলিয়ন'৷ ১৯৮৭'তে বিশ্বের জনসংখ্যা ৫০০ কোটি ছাড়ায়৷ ১২ বছর আগে তা ছিল ৬০০ কোটি৷ এ'বছরের অক্টোবরে তা ৭০০ কোটিতে দাঁড়াবে৷
সেটা একটা দিক৷ অন্য দিকটা হল: ভোরের কাগজের প্রতিবেদনে যেমনটা আছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বয়ং বলেছেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ৷ বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর ৪৭ ভাগের এক ভাগের বাস এখানে৷ অথচ বাংলাদেশের আয়তন বিশ্বের তিন হাজার ভাগের এক ভাগ৷
সমাধান কোন পথে
বঙ্গবন্ধু স্বয়ং সেই ১৯৭৫ সালে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন৷ কিন্তু আজ? সমকাল যেমন লিখছে, ‘ঝিমিয়ে পড়েছে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম৷ তার মূল কারণ সরকারি পর্যায়ে অবহেলা', লিখছে পত্রিকাটি৷ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানোর কার্যক্রমে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই৷ সে সামগ্রী ক্রয় প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা৷ তৃণমূলে বিতরণে ত্রুটি৷ পূর্ণাঙ্গ ছবিটি পাওয়া যাবে জনকণ্ঠে৷ তাদের শিরোনাম হল: ‘৩৯ ভাগ দম্পতি পদ্ধতি ব্যবহার করে না৷ অল্পবয়সীরা আগ্রহী নন, খাবি খাচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ৷' অথচ বাংলাদেশে মেয়েদের গড় বিয়ের বয়স এখনও ১৬ দশমিক ৪, এবং এক-তৃতীয়াংশ মহিলাই ২০ বছরে পা' দেওয়ার আগেই মা হয়ে যান৷ এবং জনসংখ্যার শতকরা ২৩ ভাগই হচ্ছে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী৷ কাজেই জনকণ্ঠের সিদ্ধান্ত: ‘এ অল্প বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্য কার্যক্রম ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি৷'
গ্রন্থনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়