বিশেষজ্ঞদের দেওয়া শিশু বিষয়ক কিছু ‘টিপস’
পাঁচ বছর বয়সি ছেলে এখনো বুড়ো আঙুল চোষে কেন? শিশুরা কি নিরামিষভোজী হতে পারে? অথবা কিন্ডারগার্টেনের জন্য শিশুর মানসিক প্রস্তুতি কী বা শিশুদের কখন একা টয়লেটে যাওয়া উচিৎ? এমনই নানা রকম প্রশ্নের সমাধান দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ডাইপার ছাড়ার সময় কখন?
অনেক মায়েরই প্রশ্ন, তাঁদের সন্তান কত বছর বয়স থেকে নিজে একা একা টয়লেটে যাবে বা তাদের কোন বয়স থেকে এ কাজটা করা উচিত৷ শিশু বিশেষজ্ঞের উত্তর: এর কোনো নির্ধারিত সময় নেই৷ তবে শিশুকে দুই বছর বয়স থেকেই একা টয়লেটে যাওয়ার চেষ্টা বা অভ্যাস করানো যেতে পারে৷ এক্ষেত্রেও আঙুল চোষা ছাড়ানোর মতো এক নিয়ম, মানে ক্যালেন্ডারে স্মাইলি এঁকে পয়েন্ট দিয়ে পুরস্কৃত করার মাধ্যমটি কাজে লাগানো যেতে পারে৷
বুড়ো আঙুল চোষা বন্ধ হবে কিভাবে?
মায়ের প্রশ্ন, তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে কেন এখনো বুড়ো আঙুল চোষে? শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ক্লাউডিয়া সাদির উত্তর: শিশুকে ছোটখাটো পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে এই বদ অভ্যাস ছাড়ানোর চেষ্টা করা যেতে পারে৷ যেমন শিশুর সাথে আলোচনা করে একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করুন৷ যেদিন শিশুটি সারাদিন আঙুল না চুষে থাকবে, সেদিন ক্যালেন্ডারে একটি ‘স্মাইলি’ বা হাসিমুখ এঁকে দিন৷ এভাবে চার-পাঁচটি ‘স্মাইলি’ হলে শিশুকে তার পছন্দমতো পুরস্কার দিন৷
নিরামিষভোজী শিশু?
দুই থেকে চার বয়স বয়সি শিশু শুধু সবজি খেলে কি কোন ক্ষতি হতে পারে? বিশেষজ্ঞের উত্তর: শিশুর খাবারে যদি যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ও খাদ্য উপাদান থেকে তাহলে কোনো অসুবিধা নেই৷ তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে শাক-সবজি, আঁশযুক্ত খাবার বা ফলে যথেষ্ট পুষ্টি থাকে৷ তাছাড়া শিশুদের খাবারে নিয়মিত যথেষ্ট পরিমাণে দুধ বা দুধের তৈরি খাবার, ডিম বা অন্য প্রোটিন, মিনারেল, আয়রন এবং ভিটামিনও থাকতে হবে৷
নবজাতকের ‘জন্ডিস’ নিয়ে আতঙ্ক
জন্মের পরপরই শিশুদের জন্ডিস হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়৷ এর নানা কারণ থাকে এবং সবসময় তা এড়ানোও সম্ভব হয় না৷ তাই লক্ষ্য রাখতে হবে যে নবজাতকটি যেন যথেষ্ট পরিমাণে মায়ের দুধ পান করে৷ এছাড়াও এই জন্ডিস হলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে৷ আমাদের দেশে সূর্যের আলোর অভাব নেই৷ তবে উন্নত দেশ বা জার্মানিতে নবজাতকের জন্ডিস হলে তার জন্য রয়েছে একটি বিশেষ ‘লাইট’ বা আলো থেরাপি৷
শিশুকে দুধ পান করান – এমন মা
মায়ের দুধ পান করে, এমন শিশুর মায়ের যদি ঠান্ডা লাগে তখন কী তাঁর ওষুধ খাওয়া বন্ধ? ডাক্তারি উত্তর: জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল এবং সর্দিতে নাকের ড্রপ নেয়া যেতে পারে৷ তবে উদ্ভিদ থেকে তৈরি ঔষুধ নয়, কারণ কিছু কিছু উদ্ভিদ বা ঔষুধি গাছের উপকরণে এমন কিছু থাকে, যাতে বুকের দুধ উৎপাদন কমে যেতে পারে৷ শিশুকে দুধ পান করান – এমন মায়েদের জন্য বিশেষ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে, যা ডাক্তারের পরামর্শে সেবন করাই ভালো৷
কিন্ডারগার্টেনে যাওয়ার আগে কী প্রস্তুতি নিতে হবে?
শিশু বিশেষজ্ঞের টিপস: নিজের সন্তানকে অন্য শিশু এবং বড়দের সাথে মেলামেশা করতে দিন৷ মাঝে-মধ্যে শিশুকে নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরে আসুন, নিয়ে যান চিড়িয়াখানা বা মিউজিয়ামে৷ শিশুকে সাথে নিয়ে বই পড়ুন, গল্প শোনান, ছবি আঁকুন বা কেক তৈরি করুন৷ তবে কোনোভাবেই শিশুকে ভয় দেখাবেন না এই বলে যে, কিন্ডারগার্টেন বা স্কুলে গেলে বুঝবে কত কী করতে হয় অথবা এ ধরনের কিছু৷ ভয় কিন্তু শিশুদের ব্যক্তিত্ব গঠনে বাঁধার সৃষ্টি করে৷