বিদেশি দূতাবাস চায় বিশেষ নিরাপত্তা
১ সেপ্টেম্বর ২০১৬অবশ্য দূতাবাস চাইলে নিরাপত্তার জন্য এপিসি, অর্থাৎ আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার আনতে পারবে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে৷
জানা গেছে, সশস্ত্র বেসরকারি বাহিনীর পরিবর্তে সরকার বিদেশি দূতাবাসগুলোকে নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের সশস্ত্র আনসার ভাড়ার প্রস্তাব দিয়েছে৷ আর বিদেশি দূতাবাসগুলোকে এজন্য আনসার প্রতি দিতে হবে ২৫০ ডলার করে, যা বাংলাদেশি মূদ্রামানে ২০ হাজার টাকা৷
গত রবিবার জাতীয় টাস্কফোর্সের চতুর্থ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় এবং মঙ্গলবার দূতাবাসগুলিকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে৷
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রতিটি বিদেশি মিশনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দেয়া হয়ে থাকে ৷ কোনো দূতাবাস যদি বাড়তি নিরাপত্তার প্রয়োজন মনে করে তাহলে তারা সশস্ত্র আনসার ভাড়া করতে পারবে৷
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বেসরকারি সশস্ত্র বাহিনীর কোনো সুযোগ নাই এবং এটি দিতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে৷ এজন্য আনসার বাহিনীর সদস্যদের অর্থের বিনিময়ে এ কাজে ব্যবহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘যেসব আনসার সদস্য এ কাজে নিয়োজিত হবে তাদের আমরা প্রশিক্ষণ দেবো৷ তাদের আচার-ব্যবহার ও ভাষা শিক্ষা দেয়া হবে৷''
তবে কোনো দূতাবাস যদি এপিসি (আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) দূতাবাসের নিরাপত্তার জন্য আনতে চায় তবে সরকার সেটি অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় সূত্র৷
সাধারনভাবে এক মিশন, একটি এপিসি এ নিয়ম করা হলেও কোনো মিশন বেশি আনতে চাইলে বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে আপত্তি করবেনা৷
গত বছর ইটালিয়ান নাগরিক তাভেল্লা ও জাপানি নাগরিক হোসিও কুনি নিহত হবার পরে বিদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে৷ এরপর গত জুলাইয়ে গুলশান হামলার পর বিদেশি মিশনগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন করা হয়৷ যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি কুটনীতিক ও দূতাবাস তাদের নিরাপত্তার জন্য বেসরকারি সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগের প্রস্তাব করে৷
কয়েকটি দূতাবাস তাদের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি বরাদ্দেরও অনুরোধ জানিয়ে তাদের নিজ নিজ সরকারের কাছে৷ জাপনের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় তাদের সরকারের কাছে বাজেট বরাদ্দ ৮.৩ ভাগ বড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে, যার পরিমান ৬.৯৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার৷ এই অর্থ বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাপানি নাগরিক ও মিশনের নিরাপত্তায় ব্যয় হবে৷
এ নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গুলশান হামলার পর দেশের প্রচলিত আইনের অধীনে বিদেশি মিশন ও নাগরিকদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে৷ কূটনৈতিক পল্লিতে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷ এরপরও কেউ চাইলে আনসার নিতে পারেন৷ সেজন্য আবেদন করলে নিয়ম মেনে আনসার দেয়া হবে৷''
প্রসঙ্গত কুটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে৷