বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই মরছে
ভারত ও বাংলাদেশের দুটি সংস্থার হিসেব বলছে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিএসএফ-এর হাতে দুই দেশের মানুষই প্রাণ হারাচ্ছেন৷
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিসংখ্যান
২০১৯ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সংসদকে জানান, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন৷
বছরওয়ারি সংখ্যা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন আরো জানান, ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫, ২০১১ সালে ২৪, ২০১২ সালে ২৪, ২০১৩ সালে ১৮, ২০১৪ সালে ২৪, ২০১৫ সালে ৩৮, ২০১৬ সালে ২৫, ২০১৭ সালে ১৭ এবং ২০১৮ সালে তিনজন হত্যার শিকার হন৷
শেষ দুই বছর
বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বিএসএফ গুলি করে ৪৩ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করে৷ আর ২০২০ সালে ৪২ জন গুলিতে প্রাণ হারান৷ এছাড়া নির্যাতনে মারা যান ছয় জন৷
ভারতীয় নাগরিক হত্যা
ভারতের মানবাধিকার সংস্থা ‘বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’ (সংক্ষেপে মাসুম) বলছে, ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত তারা পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ-এর হাতে নিহত অন্তত ১০৫টি হত্যার তদন্ত করেছে৷ প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত আরো বেশি বলে মনে করে মাসুম৷
নির্দেশের পরও হত্যা বন্ধ হয়নি
সীমান্ত হত্যা নিয়ে দশ বছর আগে ‘ট্রিগার হ্যাপি’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এইচআরডাব্লিউ৷ এর প্রতিক্রিয়ায় তখন ভারত সরকার বলেছিল, তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার রুখতে বিএসএফকে প্রাণঘাতী অস্ত্রের পরিবর্তে রাবার বুলেট ব্যবহারের নির্দেশ দেবে৷ কিন্তু ঐ নির্দেশের পরও হত্যা, নির্যাতন বন্ধ হয়নি বলে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন এইচআরডাব্লিউর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি৷
‘ভারত সরকারের ব্যর্থতা দায়ী’
দোষী নিরাপত্তা কর্মীদের বিচারের আওতায় আনতে ভারত সরকারের ব্যর্থতার কারণে সীমান্তের হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষেরা নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে ঐ বিবৃতিতে মন্তব্য করেছেন মীনাক্ষী গাঙ্গুলি৷ ছবিতে পশ্চিমবঙ্গের এক বাজারে ট্রাকে গরু তুলতে দেখা যাচ্ছে৷ এভাবে গরুগুলো সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হবে৷ ছবিটি ২০১২ সালে তোলা৷
ভারতকে তদন্তের আহ্বান
এইচআরডাব্লিউ ৯ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে নতুন করে ওঠা হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷
আলোচিত হত্যা
২০১১ সালের জানুয়ারিতে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারানো ১৫ বছর বয়সি বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনের কাঁটাতারে ঝুলে থাকা লাশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল৷ ২০১৩ ও ২০১৫ সালে বিএসএফের বিশেষ আদালতে দুই দফা বিচার হয়৷ এরপর বিএসএফের অভিযুক্ত কনস্টেবলকে খালাস দেয়া হয়৷ এ মামলায় নতুন তদন্ত শুরুর একটি আবেদন এখন ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে আছে৷
জেডএইচ/এসিবি (এইচআরডাব্লিউ, প্রথম আলো)