১৮ দলের হরতাল
৭ মার্চ ২০১৩বিএনপি-জামায়াতের ডাকা বৃহস্পতিবারের হরতালের শুরুতেই রাজধানীতে বাস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পিকেটাররা৷ তবে গত কয়েকদিনের হরতালের তুলনায় বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর সড়কে যান চলাচল বেড়েছে৷ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৫টি যানবাহনে আগুন দেয় হরতাল সমর্থকরা৷ এছাড়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, মালিবাগ, রাজারবাগ ও মহাখালীসহ বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়৷
হরতালের শুরুতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপির চার জন মহিলা সংসদ সদস্যকে আটক করে পুলিশ৷ সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, রেহেনা আক্তার রানু, রাশেদা বেগম হীরা ও শাম্মী আক্তার বিএনপি কার্যালয়ের ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়৷ এ সময় চার বিএনপি নেত্রীরা রাস্তায় বসে স্লোগান দিতে থাকেন৷ এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের আটক করে৷
নেতাকর্মীদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এটা অন্যায়, অগণতান্ত্রিক৷ এটা সরকারের ফ্যাসিবাদের দৃষ্টান্ত৷ যা ঘটল, তা শুধু ন্যাক্কারজনই নয়, নারকীয়ও৷ তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন৷
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, শান্তিপূর্ণ হরতালের নামে রাজপথে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হলে পুলিশ বসে থাকতে পারে না৷ বাসে আগুন, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা কোনভাবেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হতে পারে না৷
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার পোলাডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের ধারালো অস্ত্র ও লাঠির আঘাতে যুবলীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন৷ তাঁর নাম আব্দুর রহমান৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পোলাডাঙ্গা বাজারে হরতাল সমর্থকরা ভাঙচুর চালানোর সময় যুবলীগ কর্মীরা তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে৷ এ সময় হরতালকারীরা তাদের ধাওয়া করলে যুবলীগ কর্মী আবদুর রহমান পার্শ্ববর্তী এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়৷ বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা সেখানে গিয়ে তাকে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে৷ ভোলাহাট থানার ওসি এসএম ফরহাদ জানান, মারাত্মক আহত যুবলীগ কর্মী আবদুর রহমানকে পুলিশের গাড়িতে করে ভোলাহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়৷
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেছেন, পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণেই আছে৷ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে৷ শুধু জামায়াত অধ্যুষিত কিছু এলাকায় বিশৃঙ্খলা হয়েছে৷ তবে পুরো পরিস্থিতি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী শান্তিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে৷