আনিস আমরির খোঁজ চলছে ইউরোপ জুড়ে
২২ ডিসেম্বর ২০১৬ছ'মাস ধরে আমরির উপর নজর রাখে জার্মান গোয়েন্দা পুলিশ, কেননা সে তথাকথিত ‘‘গেফ্যার্ডার'' বা বিপজ্জনক ব্যক্তিদের তালিকায় ছিল৷ যে ৪০ টনের ট্রাকটি বেপরোয়াভাবে চালিয়ে বার্লিনের একটি বড়দিনের বাজারে ১১ জন মানুষকে হত্যা করা হয়, সেই ট্রাকের ড্রাইভারের সিটের নীচে আমরির আইডি-র কাগজপত্র পাওয়া যাওয়ার পর ইউরোপ জুড়ে তার খোঁজ শুরু হয়েছে৷ জার্মান কর্তৃপক্ষ আমরির নামে ফেরারি নোটিশ জারি করেছেন ও তাকে গ্রেপ্তারের হদিশের জন্য এক লাখ ইউরোর পুরস্কার ঘোষণা করেছেন৷
দৃশ্যত গত সোমবারেই, অর্থাৎ আক্রমণের দিন ট্রাকের পোলিশ ড্রাইভারকে হত্যা করে ট্রাকটি কবজা করে আততায়ী বা আততায়ীরা৷ ১১ জন প্রাণ হারান ট্রাকের ধাক্কায়৷ ৪৮ জন আহতদের মধ্যে অনেককে ছেড়ে দেওয়া হলেও, ১২ জনের অবস্থা এখনও সংকটজনক বলে প্রকাশ৷ ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী এই আক্রমণের জন্য নিজেদের দায়ী বলে ঘোষণা করেছে৷ গোড়ায় এ ব্যাপারে সন্দেহ থাকলেও, আনিস আমরির খবর বের হওয়ার পর বিশেষজ্ঞরা আইএস-এর দাবিকে আবার গুরুত্ব দিচ্ছেন৷
জার্মান জনগণ ও মিডিয়া এখন যে ব্যাপারে ক্ষুব্ধ, সেটি হলো, আমরিকে পুলিশ আগে থেকে চিনে থাকলেও সে গা ঢাকা দিতে পারল কি করে৷ সেই সঙ্গে রয়েছে শুরুতে ২৩ বছর বয়সি এক পাকিস্তানি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে সন্দেহ, যা শীঘ্রই ভুল বলে প্রমাণিত হয়৷ কিন্তু তার ফলে গোটা মঙ্গলবার ও অংশত বুধবারে পালানোর প্রশস্ত সুযোগ পেয়েছে আমরি৷ তৃতীয়ত, আমরি নিজেও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ও তার আবেদন ইতিমধ্যেই অগ্রাহ্য হয়েছে৷ তার নাকি জার্মানিতে ইসলামি উগ্রপন্থি মহলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ও সে জার্মানিতে থাকাকালীন ছ'টি বিভিন্ন নাম ও তিনটি ভিন্ন ভিন্ন নাগরিকত্ব ব্যবহার করেছে৷
জার্মানিতে আমরির রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়া সত্ত্বেও তাকে বহিষ্কার করা যায়নি কেননা তার পাসপোর্ট ছিল না – অথবা ফেলে দেওয়া হয়েছিল – অপরদিকে টিউনিশিয়া কর্তৃপক্ষ আমরিকে তাদের নাগরিক বলে স্বীকার করতে গড়িমসি করেছে৷ মাত্র গত বুধবার আমরি ইয়েমেনের পাসপোর্ট পায় - যখন পুলিশ ইউরোপ জুড়ে তার খোঁজ করছে৷ যেমন ডেনমার্কের পুলিশ সুইডেন অভিমুখী একটি ফেরিতে তল্লাশি চালায় কেননা আমরির মতো দেখতে কোনো ব্যক্তি ঐ ফেরিতে আছে বলে তাদের কাছে খবর ছিল৷ আবার জার্মান পুলিশও স্পেশাল ইউনিট সহ প্রায় ১০০ জন কর্মী নিয়ে পশ্চিম জার্মানির এমেরিশ শহরের একটি উদ্বাস্তু আবাসনে এক ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়েছে৷ এ খবর দিয়েছে জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ৷
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছে যে, ডালিয়া এলিয়াকিম নামের এক ইহুদি মহিলা বার্লিনের ট্রাক আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন৷ নিহতের স্বামী রামি এলিয়াকিম গুরুতরভাবে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছেন৷
এসি/জেডএইচ (এপি, ডিপিএ, এএফপি)