বার্লিনের ক্যাথলিক প্রাইভেট স্কুলে জেসুইট পাদ্রিদের হাতে যৌন পীড়ন
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০জনসাধারণ ক্ষুব্ধ৷ অভিযোগ, ১৯৭৫ আর ১৯৮৩ সালের মধ্যে বার্লিনের ক্যাথলিক প্রাইভেট স্কুল কানিসিউস কলেগ-এর অন্তত ২২ জন ছাত্র যৌন পীড়নের শিকার হয় এবং তিনজন পাদ্রি ঐ সব ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷
কানিসিউস কলেগ স্কুলের বর্তমান রেক্টর ফাদার ক্লাউস ম্যার্টেস নিজেই বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে যৌন পীড়নের যাবতীয় তথ্য প্রকাশ ক'রে দীর্ঘদিনের নৈ:শব্দের দেয়াল ভেঙে ফেলেন পয়লা ফেব্রুয়ারি৷ তিন বলেন, এই ঘটনায় লজ্জার কোন সীমা পরিসীমা নেই৷ তিনি বলেন, একাধিক শিক্ষক পাদ্রিদের হাতে স্কুলের ছেলেদের যৌন পীড়নের শিকার হওয়ার সুস্পষ্ট আভাস পাওয়া সত্ত্বেও তখনকার দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা নীরব থাকেন৷ তাদের এই নিশ্চুপ থাকার কারণে দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িত পাদ্রিরা পরবর্তীকালে অন্যান্য স্কুলেও ছেলের ওপর যৌন পীড়ন চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়৷
বার্তা মাধ্যমের খবরে প্রথমে দুজন পাদ্রির কথা বলা হয়েছিল৷ পরে তৃতীয় এক পাদ্রি নিজেই স্বীকারোক্তি দেয়ার পর তাকে সাসপেন্ড করার কথা জানান জার্মানিতে জেসুইট ক্যাথলিক ধর্মীয় সমাজের প্রধান স্তেফান ডার্টমান৷ এই পাদ্রি বার্লিনের কানিসিউস স্কুলে পড়াতেন৷ তারপর হামবুর্গ আর হানোফার সহ বিভিন্ন শহরের স্কুলে এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেন৷ একাধিক সাম্মানিক ডক্টরেট উপাধির অধিকারী তিনি৷ এখন বয়স তাঁর ৭০৷ তিনি নিজেই পুলিশের কাছে ধরা দেন৷
পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী, বার্লিন, হামবুর্গ, দক্ষিণ জার্মানির সেন্ট ব্লাসিয়েন এবং হিল্ডেসহাইম শহরে প্রায় ৩০টি যৌন পীড়ন ও হয়রানির ঘটনার কথা জানা গেছে৷ বার্লিনের মর্গেনপোস্ট পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ১৯৮৬ সালে কানিসিউস ক্যাথলিক স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্র তিন অভিযুক্ত পাদ্রির একজনের ওপর ছুরি নিয়ে চড়াও হয়৷ পরে সে আত্মহত্যা করে বলে প্রকাশ৷ কিন্তু ঐ পাদ্রি পুলিশকে হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত করতে দেন নি৷ যেসব পাদ্রির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন আইন কর্তৃপক্ষ এবং আইনজীবীদের কেউ কেউ৷
জেসুইটদের ক্যাথলিক ধর্মীয় শাখা সোসাইটি অফ জিসাস নামে পরিচিত৷ ষোড়শ শতকে স্থাপিত হয় এই সোসাইটি৷ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাদ্রিদের হাতে যৌন পীড়নের শিকার হওয়ার নানা ঘটনা প্রবল অস্বস্তিতে ফেলেছে ক্যাথলিক গির্জা মহলকে৷
প্রতিবেদক: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন