বার্লিনের ‘ইস্ট সাইড গ্যালারির’ ২৯ বছর
১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের ২১টি দেশের ১১৮ শিল্পী বার্লিন প্রাচীরে আঁকতে শুরু করেন৷ সে বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ ১০০-র বেশি দেয়ালচিত্র তৈরি হয়৷ আর এভাবেই জন্ম হয় ‘দ্য বার্লিন ইস্ট সাইড গ্যালারির’৷
বার্লিনের প্রতীক
এটা বার্লিনের অন্যতম প্রদর্শিত স্থান৷ জার্মানির পুনরেকত্রীকরণ নিয়ে অসংখ্য শিল্পী তাদের শিল্প ভাবনার অমর রূপ দিয়েছেন ১ দশমিক তিন কিলোমিটার প্রসারিত এই দেয়ালে৷ তাদের একজন দিমিত্রি ভ্রুবেল৷ মস্কোর এই অপরিচিত আর্ট শিক্ষার্থী ১৯৯০ সালে সাবেক সোভিয়েত এবং তৎকালীন পূর্ব জার্মানির প্রধান লিওনিড ব্রেজনেভ ও এরিশ হ্যনেকার-এর মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ চুমুর এই দেয়ালচিত্রটি আঁকেন৷
ভুক্তভোগীদের স্মরণ
বার্লিন প্রাচীরের তথাকথিত ‘ডেথ স্ট্রিপ লাইন’ এবং ওয়াচটাওয়ারের কাছেই ‘দ্য ইস্ট সাইড গ্যালারির’ অবস্থান৷ সেসময় কাউকে দেয়াল পার হতে দেখলে গুলি করার অনুমিত ছিল পাহারাদার সেনাদের৷
সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ
জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের আনুষ্ঠানিক দিন ৩রা অক্টোবরের কয়েকদিন আগে ৯০-এর দশকের ২৮শে সেপ্টেম্বর গ্যালারিটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়৷ তখন থেকেই সেখানকার অনেক দেয়ালচিত্র পোস্টকার্ড আকারে বার্লিনের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে৷
বিতর্কিত সংস্কার
বার্লিন প্রাচীরের রয়ে যাওয়া অংশকে সারাক্ষণ বাতাস এবং আবহাওয়া মোকাবিলার পাশাপাশি পর্যটকও স্যুভেনিয়ার প্রস্তুতকারীদের খোঁচা সহ্য করতে হয়৷ আর তাই দেয়ালের সংস্কারও জরুরি৷ ২০০৮ সালের অক্টোবরে তাই চিত্রকর্মগুলো পুনরায় পালিশ করার প্রয়োজন হয়৷ কিছু শিল্পী অবশ্য এমনটা করতে রাজি হননি৷ তবে অনেকেই সম্মতি দিয়েছেন৷
আর্ট ফ্ল্যাশ মব
জার্মান পপ শিল্পী জিম আভিগনওন ১৯৯০ সালে তাঁর ‘ডুইং ইট কুল ফর দ্য ইস্ট সাইড’ চিত্রকর্মটি তৈরি করেন৷ ২০১৩ সালে তিনি সেই চিত্রকর্মের উপর আনুষ্ঠানিক অনুমতি ছাড়াই কিছু আর্ট শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন করে আঁকেন৷ ফলে চরম সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি৷
দেয়ালের কিছুটা সরিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা
একটি বহুতল ভবন তৈরির জন্য ২০১৩ সালে ইস্ট সাইড গ্যালারির কিছু অংশ সরিয়ে প্রবেশদ্বার তৈরি করেন বিনিয়োগকারীরা৷ সেসময় বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ হলেও তা সফল হয়নি৷ বর্তমানে ভবনটি তৈরির কাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে৷ ২০১৫ সালের প্রথম ছ’মাসের মধ্যে কাজ পুরো শেষ হওয়ার কথা৷
সময়ের সাক্ষী
যদিও অনেক শিল্পী সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চিত্রকর্মের যত্ন নিয়েছেন, তা সত্ত্বেও কিছু শিল্পকর্ম অযত্ন অবহেলায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে৷ কোনো কোনো চিত্রকর্মের ওপর আবার গ্রাফিটি আঁকা হয়েছে৷
রূপালি পর্দায় গ্যালারি
বার্লিন ইস্ট সাইড গ্যালারি নিয়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছেন জার্মান ফিল্মমেকার কারিন কাপের এবং ডির্ক স্যুসজিস৷ শিল্পী টোমাস ক্লিঙ্গেনশ্টাইন আশা করছেন তথ্যচিত্রটি বার্লিন প্রাচীরের এই অংশটি রক্ষায় ভবিষ্যতে সহায়তা করবে৷