বার্লিনে ‘বাংলাদেশি কুইজিন’ উৎসব
২২ জুন ২০১১খাই খাই কর কেন, এস বস আহারে –
খাওয়ার আজব খাওয়া, ভোজ কয় যাহারে৷
যত কিছু খাওয়া লেখে বাঙালির ভাষাতে,
জড়ো করে আনি সব, থাক সেই আশাতে৷
ডাল ভাত তরকারি ফলমূল শস্য,
আমিষ ও নিরামিষ, চর্ব্য ও চোষ্য,
রুটি লুচি, ভাজাভুজি, টক ঝাল মিষ্টি,
ময়রা ও পাচকের যত কিছু সৃষ্টি৷
বাঙালির খাওয়া কত প্রকার ও কী কী, গত শতকের বিশ দশকে সুকুমার রায় লিখেছেন তাঁর ‘খাই খাই' ছড়ায়৷
বলা হয়, খাদ্যসংস্কৃতির তালিকায় চীন পয়লা৷ এই তথ্য সঠিক নয়৷ ভারতই প্রথম৷ ভারতের নানা প্রদেশের খাদ্যসংস্কৃতি যদি তালিকাভুক্ত করা যায়, ভারতীয় খাদ্য নামে, দেখা যাবে, হিসেবে কুলকিনারা পাওয়া দুস্কর৷
ইউরোপসহ পশ্চিমাদেশে ভারতীয় খাবার বলতে আসলে উত্তর ভারতের তথা মোঘলাই খাবারের আধিক্য৷ রুটি-মাংসের কদর বেশি৷ তেল, মসল্লাপাতি অধিক৷
কথায় বলে, ভাতেমাছে বাঙালি৷ মাছের আকালে এই প্রবাদ এখন শুধুই কেতাবে৷ একদা কতরকম মাছ ছিলো বাংলাদেশে৷ কতরকম বাহারি রান্না৷ ইলিশেরই ৮ রকম রন্ধনপ্রণালী৷ পাকা-চিতলের কোফতা বা মুঠি এখন দিবাস্বপ্ন৷
ব্রিটেনে ভারতীয় রেস্তরাঁর ৯০ ভাগ মালিক, পাচক বাংলাদেশের৷ ইউরোপের অন্যান্য দেশে সেই তুলনায় কম৷ বাংলাদেশি রেস্তরাঁ বললে কোনো খাদক আসবে না৷ খাবে না৷ রেস্তরাঁর নাম যাই হোক, খাদ্য তালিকায় লিখতেই হবে ভারতীয় খাবার৷ এহ বাহ্য৷ রেস্তরাঁর সাইনবোর্ডে ভারতীয় রেস্তরাঁ না লিখলে খাদক আকৃষ্ট হবে না৷ তা খাবার যতই সুস্বাদু হোক না কেন৷
--- এই ট্যাবু ভাঙার জন্যেই, বার্লিনের বাংলাদেশ দূতাবাস, ঢাকার পাঁচ তারকাখচিত হোটেল থেকে পাচক এনে, বাংলাদেশি খাদ্যসংস্কৃতির উৎসব আয়োজন করে বার্লিনের একটি ৫-তারা হোটেলে৷ ৯ দিনব্যাপী উৎসবে গ্রাহক অথবা খাদক জার্মানসহ ইউরোপের নানা দেশের মানুষ৷
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মসুদ মান্নান বলেন, উৎসবে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছে৷ খাদকরা বাংলাদেশের কুইজিনে তুমুল আগ্রহী৷ এরকম উৎসব পূর্ব এবং পশ্চিম ইউরোপের আরো কয়েকটি শহরে করা হবে৷ তুলে ধরা হবে বাংলাদেশের খাদ্যসংস্কৃতি৷
প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার, বার্লিন
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী