1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বার্লিনে প্রতি রাতে জ্বলছে গাড়ি

২১ আগস্ট ২০১১

বার্লিনের বিএমডব্লিঊ, মার্সিডিজ আর ফোক্সভাগেন গাড়ির মালিকদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে৷ কারণ গত সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে - যেটা নিয়ে রাজনীতির মাঠও কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/12Kco
এ ধরনের দামি গাড়িও পোড়ানো হচ্ছেছবি: BMW

শুরুটা সোমবার রাতে৷ সেদিন মোট ১১টি গাড়ি পোড়ানো হয়৷ কাজটা খুব সহজ৷ রাতের আঁধারে গাড়ির নীচে বারবেকিউ সেট রেখে দেয়া৷ এর ১৫ মিনিট পরেই, বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয়তো আরও কিছুটা সময় পরে গাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়৷ যেহেতু গাড়ির নীচে অঙ্গার রাখা আর গাড়ি পুড়তে শুরু করে ধোঁয়া বের হওয়ার মধ্যে অনেক সময় পাওয়া যায়, তাই কে কাজটি করলো সেটা বোঝা যায় না৷ ফলে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তারও করা যায়নি৷

বার্লিন পুলিশের প্রধান মার্গারেটে কপের্স স্বীকারও করেছেন তা৷ ‘বার্লিনার সাইটুং' সংবাদপত্রকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারীরা কাজ শেষে পালিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়ায় তাদের ধরা যাচ্ছে না৷

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গত পাঁচ রাতে প্রায় ৭০টির মতো গাড়ি পুরোপুরি বা আংশিকভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷

গত কয়েক বছর ধরেই অবশ্য বার্লিনে গাড়ি জ্বালানোর মতো ঘটনা ঘটছে৷ শুরুর দিকে বামপন্থিরা এ কাজ করতো৷ তারা বড় বড় যেসব কোম্পানি পছন্দ করতো না, তাদের গাড়িতে আগুন দিত৷ এছাড়া সেনাবাহিনীর গাড়িও তাদের লক্ষ্য ছিল৷

Klaus Wowereit
মেয়র ক্লাউস ভোভেরাইটছবি: AP

পুলিশ বলছে, গত সপ্তাহের ঘটনাও বামপন্থি ধারায় উৎসাহিতদের কাজ হতে পারে৷ কেননা বেছে বেছে তারা মধ্যবিত্তদের বাড়ির সামনে রাখা অভিজাত গাড়িগুলোতেই আগুন দেয়ার কাজ করছে৷

এদিকে জার্মানির এক অপরাধ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিয়ান ফাইফার মনে করছেন, লন্ডনে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে অনুপ্রেরিত হয়ে কেউ কেউ এই কাজ করতে পারে৷

জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ'কে তিনি বলেছেন, হয়তো একজন বা কিছু লোকের সমন্বয়ে গঠিত একটি গোষ্ঠী প্রথমে এই কাজ শুরু করেছিল এই আশা নিয়ে যে, তাদের দেখাদেখি হয়তো অন্যরাও সেটা শুরু করতে পারে৷ যেমনটা হয়েছিল লন্ডনের ক্ষেত্রে৷

তবে কারণ যেটাই হোক, বার্লিনের এই গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা রাজনীতিতে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে৷ কেননা আগামী মাসেই বার্লিনে নতুন মেয়র নির্বাচন ছাড়াও আঞ্চলিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে৷

চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ইতিমধ্যে গাড়ি জ্বালানোর ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন৷ এদিকে তাঁর খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দলের মহাসচিব হের্মান গ্রোয়হে ঘটনার জন্য বর্তমান মেয়রের সমালোচনা করেছেন৷ উল্লেখ্য, মেয়র ক্লাউস ভোভেরাইট অন্য একটি দলের সদস্য, যার নাম সামাজিক গণতন্ত্রী দল৷

গ্রোয়হে বলছেন মেয়র ভোভেরাইট নিরাপত্তা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না৷

কিন্তু ভোভেরাইট জানিয়েছেন দুষ্কৃতকারীদের ধরতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ তারা রাতের বেলায় বার্লিনের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়৷ এছাড়া একটি বিশেষ হেলিকপ্টারও সারা রাত বার্লিনের আকাশে ঘুরে বেড়ায়৷ ঐ হেলিকপ্টারে থার্মাল ভিশন ক্যামেরা রয়েছে যেটা অপরাধীদের ধরতে সহায়তা করে৷

এদিকে সন্দেহজনক কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সেটা পুলিশকে জানানোর জন্য নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মেয়র৷ এছাড়া পুরস্কারেরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি৷ ফলে কোনো নাগরিকের তথ্য যদি অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে সহায়তা করে তবে তাকে পাঁচ হাজার ইউরো ইনাম দেয়া হবে৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী