ফুকুশিমার মেঘ
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২চলচ্চিত্র জগতের উপর কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার প্রভাব নতুন নয়৷ গত বছরের কিছু ঘটনা ও প্রবণতার উপর ভিত্তি করে তৈরি ছবি এবছর মুক্তি পেয়েছে বা পাচ্ছে৷ বিশেষ করে আরব বিশ্বে পরিবর্তনের হাওয়ার বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে চলচ্চিত্রের পর্দায়৷ বছরের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা – ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রের দুর্ঘটনাও ব্যতিক্রম নয়৷ ১১ই মার্চের এই বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে গোটা বিশ্বে পরমাণু বিদ্যুতের উপযোগিতা ও ঝুঁকি নিয়ে জোরালো বিতর্ক চলছে৷ জার্মানি ২০২২ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে সব পরমাণু বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ জাপানে অবশ্য এখনো এবিষয়ে বিতর্ক চলছে৷
‘নিউক্লিয়ার নেশন' ছবির পরিচালক আতসুশি ফুনাহাশি বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে এসে অত্যন্ত সন্তুষ্ট৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ের উপর ছবির মঞ্চ হিসেবে বার্লিনের ভূমিকার বিশেষ প্রশংসা করেন তিনি৷ ১৯৪৫ সালে হিরোশিমায় পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের সময়েও ফুনাহাশির পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ তা সত্ত্বেও ফুকুশিমা নিয়ে ছবি করার সময়ে তাঁর মনে সংশয় ছিল৷ পরিচালক হিসেবে কিছু একটা করার তাগিদ অনুভব করেছিলেন বলেই শেষ পর্যন্ত তিনি এই কাজে হাত দেন৷ দুর্ঘটনার পর ফুতাবা এলাকার মানুষদের উদ্ধার করে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত স্কুলে ঠাঁই দেওয়া হয়েছিল৷ তাদের সেই অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই ছবিটি তৈরি করেন আতসুশি ফুনাহাশি৷ শহরটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও শহরের মেয়র কীভাবে সেখানকার মানুষকে সংঘবদ্ধ রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, ছবিতে সেই প্রচেষ্টাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷
জাপানি পরিচালক তোশি ফুজিওয়ারা'র ‘নো ম্যানস জোন' ছবিতে ফুকুশিমার কাছে ২০ কিলোমিটার এলাকার অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে৷ মানুষ নয়, পরিত্যক্ত এই এলাকার ধ্বংসের মাত্রাই মূলত ধরা হয়েছে ক্যামেরার লেন্স'এ৷ তুলে ধরা হয়েছে সেই সব মানুষের বয়ান, যারা কার্যত সব কিছু হারিয়েছে৷ ‘ফ্রেন্ডস আফটার থ্রি ইলেভেন' ছবিতে পরিচালক ইওয়াই শুনজি পরমাণু কেন্দ্রের এক ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংক কর্মী ও সাংবাদিকের বন্ধুত্বের কাহিনি তুলে ধরেছেন৷ এমন বন্ধুত্বের আলোকে তিনি জাপানের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছেন৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ