ভাইরাল ভিডিও
১২ অক্টোবর ২০১৬আজ থেকে ৪৫ বছর আগে আমার নিজের চোখে দেখা৷ কলকাতার নিউ আলিপুরে এক বন্ধুর মামার অ্যালসেশিয়ান মাদি কুকুরটার ওপর মামার দুই যমজ - বয়স মাস আটেক না মাস নয়েক - টলমল সিং, সবে হাঁটতে শিখেছে, এই দুই ডানপিটে দৌড়ে গিয়ে ডেইজি অ্যালসেশিয়ানটার উপর ঝাঁপ খাচ্ছে আর ডেইজি তার নিজের মুখচোখ দুই থাবা দিয়ে ঢেকে প্রেমের অত্যাচার থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে৷
অথচ ডেইজি একবার ঠোঁট উল্টে দাঁত খিঁচোলে পরের দিন থেকে পোস্ট অফিসে গিয়ে চিঠি নিয়ে আসতে হয়, কেননা পাড়ার পিয়ন গেট খুলে ভেতরে আসতে চায় না৷ ‘‘ডেইজি যদি বাচ্চাদের কামড়ে দেয়?'' আমি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম৷ ‘‘আস্তে বলো,'' মামা হেসে বলেছিলেন, ‘‘ডেইজি শুনলে তোমাকেই কামড়ে দেবে৷ আমি আর গিন্নি ছাড়া অন্য কেউ বাচ্চাদের কাছে গেলেই ছায়ার মতো ঘুর ঘুর করে৷ রক্ষা করছে আরকি!''
তার ৪৫ বছর পরে আবার জার্মানিতে এ-ও দেখেছি যে, একটি টেরিয়ার কুকুর মরমে মরে রয়েছে, কেননা, বাড়িতে সবার চোখ এখন বেবির দিকে৷ সে বেচারা যে তার কোণায় মুখ চুন করে পড়ে রয়েছে, সেদিকে কেউ তাকায় না পর্যন্ত৷ শুধু আমাদের মিকা কুকুর কেন, বহু মদ্দা, প্রবীণ ও অভিজ্ঞ কুকুরদের দেখেছি, একেবারে কচি বাচ্চারা যা-ই করুক না কেন, তারা মুখ বুঁজে সয়ে যায় - একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে গলা দিয়ে একটা ঘড়ঘড় শব্দ করে, যা কিনা সাবধানবাণী৷ তবে কামড়ানোর কোনো প্রশ্নই ওঠে না, কেননা, কুকুরদের নীতিমালায় সবার ওপরে লেখা রয়েছে জার্মানে যাকে বলে ‘‘ভেল্পেন শুট্জ'', অর্থাৎ ‘পাপি' সুরক্ষা, অর্থাৎ ছোটদের সাত খুন মাপ৷
আমাদের এবারকার ভাইরাল ভিডিওটি এ পর্যন্ত দেখেছেন প্রায় ৬২ লাখ মানুষ৷ আর কিছু নয়, একটি সাত মাসের বাচ্চা একটি পুরোদস্তুর সাইবেরিয়ান হাস্কির সঙ্গে খেলা করছে৷ এই লোমশ কুকুরগুলি বাচ্চাদের কিছু করে না বলে নাম আছে৷ আমাদের মাদি হাস্কি যেন সেটা এই মিনিট তিনেকের ভিডিওতে প্রমাণ করে দিল৷ অথচ বেচারা তার পুরনো, চিবিয়ে ছিবড়ে হয়ে যাওয়া টেনিস বলটা নিয়ে খেলতে চাইছিল৷ কিন্তু তার মধ্যে যদি বেবি এসে পড়ে, তাহলে তো আর ‘না' বলা যায় না...
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী