আইএস কি শেষ হয়ে গেছে?
২৮ অক্টোবর ২০১৯তথাকথিত ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর নেতা আবু বকর আল বাগদাদির মৃত্যুর ফলে গোটা বিশ্বে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়লেও আইএস এখনো হুমকি রয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরানসহ একাধিক দেশ আইএস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেছে৷ বাগদাদির মৃত্যুর আগেই ওয়াশিংটন যেভাবে আচমকা সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার ফলেও আইএস আবার মাথাচাড়া দেবার সুযোগ পেতে পারে বলে আগেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল৷ কারণ সেই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংগ্রামে সাফল্যের মূল দাবিদার কুর্দিরাই বর্তমানে তুরস্কের সামরিক অভিযান সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে৷
সিরিয়া ও ইরাকে জমি হারালেও আইএস গোষ্ঠীর সংগঠন ও আদর্শ ভবিষ্যতেও বিপদের কারণ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করে দিয়েছেন৷ আগের মতো সরাসরি বিভিন্ন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে না পারলেও সাম্প্রতিক কালে আইএস অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে৷ কিছু ক্ষেত্রে এমনকি আত্মঘাতী হামলাও চালিয়েছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সরাসরি অথবা পরোক্ষভাবে হিংসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে এই গোষ্ঠী৷ বিশেষ করে গত এপ্রিল মাসে শ্রীলঙ্কায় গির্জার উপর হামলার ঘটনায় আড়াইশোরও বেশি মানুষ নিহত হবার পর আইএস-এর প্রভাব আবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷ সব ঘটনার সঙ্গে আইএস জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়া গেলেও তাদের আদর্শগত শক্তি প্রতিবার আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে৷
গত জানুয়ারি মাসে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল যে সিরিয়ার তুলনায় ইরাকে আরও দ্রুত গতিতে আইএস-এর পুনরুত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি বছরে ইরাকে প্রায় ২,০০০ আইএস জঙ্গি সক্রিয় রয়েছে৷ সিরিয়ায় কুর্দিদের সূত্র অনুযায়ী সে দেশের পূর্বাঞ্চলে আএএস-এর ‘স্লিপার সেল' গজিয়ে উঠছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অনেক মানুষ আইএস-এর হয়ে লড়াই করতে সেখানে আসছে৷ সিরিয়া ও তুরস্কের সীমান্তে বর্তমান অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে বন্দি আইএস জঙ্গিরাও পালাবার চেষ্টা করছে৷ তুরস্ক সম্প্রতি প্রায় ২০০ পলাতক বন্দিদের আটক করেছে বলে জানিয়েছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প প্রশাসনের সিরিয়া নীতি চাপের মুখে পড়ছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে আইএস-এর জমি হারানো এবং এবার বাগদাদির মৃত্যুকে সম্বল করে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে সঠিক হিসেবে তুলে ধরছেন৷ অথচ তাঁরই প্রশাসন, এমনকি রিপাব্লিকান দলেও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে৷ এই অবস্থায় মার্কিন প্রশাসন বাধ্য হয়ে কিছু সৈন্য আইএস দমনে সক্রিয় থাকবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এপি, এএফপি)