বাংলাদেশের বিমানের ভয়াবহ দুর্ঘটনা
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান৷ ৭১ জন আরোহী ছিল বিমানটিতে৷ তার মধ্যে অন্তত ৫০ জান মারা গেছে৷
যারা ছিলেন বিমানে
ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস ২১১ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫২ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল থেকে রওনা হয়৷চার জন কেভিন ক্রু-সহ মোট ৭১ জন আরোহী ছিল ইউএস-বাংলার বোম্বার্ডিয়ার কিউ৪০০ বিমানটিতে৷ ৬৭ জন যাত্রীর মধ্যে ৩৩ জন ছিলেন নেপালের, ৩২ জন বাংলাদেশের আর একজন করে চীন এবং মালয়েশিয়ার৷
রহস্যজনক দুর্ঘটনা
নেপাল সময় বেলা ২টা ১৮ মিনিটে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাভাবিক অবতরণের উদ্যোগই নিয়েছিলেন বৈমানিক৷ কিন্তু অবতরণের অনুমতি পাওয়ার পরই তিনি উত্তর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ আকাশে দু’বার পাক খেতে দেখা যায় বিমানটিকে৷ তারপর কন্ট্রোলরুমের আপত্তি সত্ত্বেও তড়িঘড়ি অবতরণের উদ্যোগ নেন পাইলট৷ বিমানবন্দরের প্রাচীরে ধাক্কা দিয়ে বিমান নেমে পড়ে মাটিতে আর সঙ্গে সঙ্গেই আগুন জ্বলতে শুরু করে৷
প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ
মার্কিন নাগরিক অ্যামান্ডা সামার্স কর্মসূত্রে এখন নেপালেই থাকেন৷ সোমবার ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়ার আগে তিনি পরিষ্কার দেখেছেন ইউএস-বাংলার যাত্রীবাহী বিমানটিকে৷ বার্তাসংস্থা এপিকে তিনি বলেছেন, ‘‘বিমানটি এত নীচ দিয়ে উড়ছিল যে, আমার মনে হয়েছিল এক্ষুণি বুঝি পাহাড়ে গিয়ে ধাক্কা খাবে৷ তারপর হঠাৎই প্রথমে একবার এবং তারপর আরেকবার বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই৷’’
মোট কতজন নিহত?
৭১ জন আরোহীর মধ্যে বিভিন্ন বার্তা সংস্থা ৫০ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে৷ ১২ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ বাকি ৯ জনের বিষয়ে এখনো কিছুই জানা যায়নি৷ নিহতদের অনেকের দেহই পুড়ে প্রায় ছাই৷ আহতদেরও কারো কারো অবস্থা শঙ্কাজনক৷ মৃতের সংখ্যা বাড়তেই পারে৷
বাংলাদেশের ভয়াবহতম বিমান দুর্ঘটনা
এ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো বিমানের যে কয়টি দুর্ঘটনা হয়েছে তার মধ্যে এটিই ভয়াবহতম৷ এর আগে ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট প্রতিকূল আবহাওয়ায় অবতরণের সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফকার এফ২৭-৬০০ বিমান বিমানবন্দরের কাছের জলাভূমিতে বিধ্বস্ত হয়৷ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে আসা ঘরোয়া ফ্লাইটের বিমানটির ৪৯ জন আরোহীর সবাই মারা যান৷ কাঠমান্ডুর দুর্ঘটনা ১৯৮৪ সালের ভয়াবহতাকে ছাড়িয়ে গেছে৷