বাংলাদেশের বায়ু দূষণ কমাতে প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ঢাকা শহরের ব্যস্ততম স্থান সড়ক সায়েদাবাদ৷ এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার পরিবহন শহর ও শহরের বাইরে যাতায়াত করে৷ কেবল এই স্থানের কথা বলছি কেন, রাজধানী ঢাকার অনেক স্থানেই দাঁড়ালে চোখে পানি চলে আসতে পারে৷ পুরানো গাড়ির কালো ধোঁয়া আর রাজধানীকে ঘিরে রাখা ইটের ভাটার থেকে নির্গত ধোঁয়ায় ধোঁয়াশা ঢাকা৷
পরিবেশ দূষণ বাংলাদেশের প্রধান একটি সমস্যা৷ প্রতিনিয়ত এ সমস্যা বেড়েই চলেছে৷ এ ব্যাপারে পরিবেশবিদরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ পরিবেশ দূষণের কারণে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা ৷ কেবল ঢাকা নয়, চট্টগ্রামের মতো অন্য অনেক বড় শহরেও বায়ু দূষণ একটি বড় সমস্যা৷
বায়ু দূষণে র মূলে প্রধানত দুটি কারণ রয়েছে৷ প্রথমত, কলকারখানার ধোঁয়া এবং দ্বিতীয়ত, যানবাহনের ধোঁয়া৷ সার কারখানা, চিনি, কাগজ, পাট এবং কাপড় তৈরির মিল, ট্যানারিজ বা চামড়ার কারখানা, গার্মেন্টস, রসায়ন ও ওষুধ শিল্প থেকে প্রচুর পরিমাণ ধোঁয়া নির্গত হয়, যাতে থাকে নানা ক্ষতিকারক উপাদান৷
ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, অধিকহারে যানবাহন বৃদ্ধি বায়ু দূষণে ভূমিকা রাখছে৷ বেবি ট্যাক্সি, টেম্পো, মটর সাইকেল, ট্রলি প্রভৃতি টু-স্ট্রোক যানবাহন থেকে অধিক ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকা শহরের ৯০ শতাংশ যানবাহন ত্রুটিপূর্ণ, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর৷ সম্প্রতি সরকার ২০ বছরের অধিক পুরাতন যানবাহন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ কিন্তু তারপরেও ঢাকার রাস্তায় চলছে পুরানো এবং ক্রটিযুক্ত ইঞ্জিনের গাড়ি৷
কর্মকর্তারা বলছেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ ছাড়া বায়ু দূষণ ঠেকানো সম্ভব নয়৷ বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে শিল্প কারখানার পরিবেশ ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক করতে হবে৷ প্রয়োজন কঠোর মনিটরিং৷
বায়ু দূষণ সমস্যা মোকাবিলায় এবার সরকার বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় গ্রহণ করেছে একটি বড় প্রকল্প৷ যে পরিকল্পনার আওতায় রাজধানীসহ পাঁচ বড় শহরে বায়ু দূষণ রোধ এবং যানজট নিরসনের উপায় এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷ এ নিয়ে কথা বলছিলাম বাংলাদেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. এম নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে৷ তিনি জানালেন,দেশের চার সিটি করপোরেশন (ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল) এবং বগুড়া শহরের বায়ুমান ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি, যানবাহন চলাচল ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে যানজট নিরসন এবং ইট ভাটার নির্গমন ব্যবস্থাপনা, বাসরুট নেটওয়ার্ক যুক্তিযুক্তকরণ, পরিবহন কম্পোনেন্টের দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি সহায়তা দেওয়াই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য৷ প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংক সাহায্য হিসেবে দেবে ৪৪৫ কোটি টাকা৷ ২০১৪ সালের জুন মাস নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন