1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে’

সমীর কুমার দে, ঢাকা৩০ মে ২০১৪

জার্মানির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলব্রেশট কনসে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের কিছু এলাকায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ভয়াবহ উদ্বেগজনক৷’’ তাঁর মতে, বাংলাদেশের কয়েকটি জায়গা বা এলাকা বর্তমানে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে৷

https://p.dw.com/p/1C9MY
Bangladesch DW launches TV-Magazin Onneshon
ছবি: DW/R. Manzoor

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন আলব্রেশট কনসে৷ বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক করা সরকারের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ৷

বিদায়ী জার্মানির রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি একমত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এম শাহেদুজ্জামান৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলার সময় আরো এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা না গেলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই হুমকির মুখে পড়বে৷’’ তিনি বলেন, দেশের কয়েকটি জায়গা নয়, অধিকাংশ এলাকাতেই সরকারের অনুমান নির্ভর নিয়ন্ত্রণ আছে৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বল প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে আছে বর্তমান সরকার৷

জার্মানির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন ও ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘ঢাকার অদূরেই অত্যন্ত ভয়াবহ কিছু ঘটনা আমরা লক্ষ করেছি৷ তাই দেশের জনগণের স্বার্থে সর্বত্র আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা জরুরি এবং এ মুহূর্তে তা বাংলাদেশের জন্য একটা চ্যালেঞ্জই বটে৷’’ তিনি বলেন, ‘‘আইন-শৃঙ্খলা সমস্যার রাতারাতি সমাধানের জন্য সারা দেশে সরকারের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন৷ কারণ, বাংলাদেশের কয়েকটি জায়গা রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে৷’’

আলব্রেশট কনসে বলেন, লোকজন যদি বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পায়, এ জন্য কিছু করাটা রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে৷ সূচনালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ নানা রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আসছে৷ কিন্তু আগামী মাসগুলোতে এবং বছরগুলোতে বাংলাদেশ যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, তার ধরন অতীতের চেয়ে আলাদা বলে মন্তব্য করেন বিদায়ী জার্মান রাষ্ট্রদূত৷

তিনি জানান, স্পিকার তাঁকে এটা বলে আশ্বস্ত করেছেন যে শেখ হাসিনার সরকার সব নাগরিকের জানমাল রক্ষায় আইনের আওতাতেই দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে৷ গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে ইউরোপের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি৷ তবে অতীতের চেয়ে ভবিষ্যৎ বেশি গুরুত্বপূর্ণ – এটাই আমার উত্তরসূরিকে বলে যাব৷ অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে পাশে থাকবে জার্মানি৷’’

অধ্যাপক এম শাহেদুজ্জামান বলেন, ‘‘জার্মানির রাষ্ট্রদূত কিন্তু হুট করেই কথাটা বলেননি৷ তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থান করে যে পর্যবেক্ষণ করেছেন, তা থেকেই কথাটা বলেছেন৷ তাঁর পর্যবেক্ষণ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মতের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে৷’’

তিনি বলেন, গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান নিয়েছে – তা ঠিকই ছিল৷ কারণ ঐ নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি৷ তাই ভোটারবিহীন নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের কোনো বৈধতা থাকতে পারে না৷ এছাড়া এ ধরনের সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকে সামান্যই৷

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই বিশ্লেষকের কথায়, ‘‘সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বল প্রয়োগের মাধ্যমে বেছে বেছে মানুষকে বিচার করছে ও শাস্তি দিচ্ছে৷ ফলে সাধারণ মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই৷’’ তিনি বর্তমান সময়কে দেশ স্বাধীনের আগের (১৯৭১-এর পূর্ববর্তী) সময়ের সঙ্গে তুলনা করেন৷ ঐ সময় যেমন কোনো নির্বাচিত সরকার ছিল না, জোর করেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় টিকে থাকতে যা যা করেছিল – বর্তমান সরকারও তাই তাই করছে৷ আসলে এই অবস্থা থেকে মানুষের মুক্তি দরকার৷ তাই দ্রুত সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ একটা নির্বাচন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা দিলেই সব সংকট কেটে যাবে বলে মনে করেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য