বাংলাদেশে ‘ফারাজ' প্রচার-প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে সোমবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জমান ও বিচারপতি মো. বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন৷
গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলোসহ সব ধরনের অনলাইন প্লাটফর্মে ভারতীয় সিনেমা ‘ফারাজ'মুক্তি না দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন হলি আর্টিজনের ঘটনায় নিহত অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদ৷
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত ভারতীয় সিনেমা ‘ফারাজ'বাংলাদেশের মুক্তির প্রশ্নে রিট আবেদনে রুল জারিরও আরজি জানানো হয়৷ রিট আবেদনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়৷
পরে রিটকারীর আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, ফারাজ সিনেমা বাংলাদেশের কোনো অনলাইন প্লাটফর্মসহ কোথাও প্রদর্শন করা না হয় সেজন্য রিট দায়ের করা হয়েছে৷ এই সিনেমায় দেখানো হয়েছে দুইজন জঙ্গি কথা বলছেন, তার মধ্যে একজনের সঙ্গে অবিন্তার সম্পর্ক ছিল বা আছে এবং তার পোশাক পরিচ্ছেদ এমনভাবে দেখানো হয়েছে যা আমাদের সভ্য সমাজে শিক্ষিত পরিবার কখনো এসব পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করে না৷ এই সিনেমায় মেয়েটাকে চারিত্রিকভাবে অবনতি করা হয়েছে৷ এমনকি পুলিশকে ব্যর্থ দেখানো হয়েছে৷ যা একটি সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন৷ এসব কারণে বাংলাদেশের কোনো প্লাটফর্মে আসা উচিত না৷ তাই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়েছিল৷
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলায় নিহত হয় ফারাজ আইয়াজ হোসেন ও অবিন্তা কবিরসহ ২০ জন৷ জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যদের এই হামলায় ১৭ বিদেশী নাগরিক ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন৷ আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করে৷ পরে কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গির মৃত্যু হয়৷
এই জঙ্গি হামলা নিয়ে বানানো হয়েছে 'ফারাজ'৷ হংসল মেহতা পরিচালিত টি-সিরিজের সিনেমাটি গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভারতে মুক্তি পেয়েছে৷ ‘ফারাজ'–এর প্রযোজক বলিউড নির্মাতা অনুভব সিনহা৷ এই মুভিতে চিত্রায়িত গল্প নিয়ে বিতর্ক তোলেন অবিন্তার মা৷
গত ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর শাহজাদপুরে অবিন্তা কবির ফাউন্ডশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে রুবা আহমেদ বলেন, ‘ফারাজ সিনেমাটি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে৷ সিনেমাটির নির্মাতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি৷ এ ঘটনায় তারা সহমর্মিতাও প্রকাশ করেনি৷ আইনি নোটিশ পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি৷' পরে এ বিষয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন৷
অবিন্তার মা বলেন, সিনেমাটির নাম ফারাজ হয়েছে৷ তার মানে ডেফিনিটলি একটি ক্যারেক্টারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে৷ সেই ক্যারেক্টারকে জোর দিতে গিয়ে আমার মেয়ের কথা চলে এসেছে৷ আমরা জানি না সেদিন আমার সন্তান এবং অন্যরা কিসের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল৷ কেউ আমরা জানি না৷ কোনদিন আমরা জানতেও পারবো না৷‘
একেএ/কেএম (সমকাল, বাংলা ট্রিবিউন)