জঙ্গিবাদের উত্থানের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬জেমস ক্ল্যাপার মনে করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে খাটো করতে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা বাংলাদেশের ভেতর আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করবে৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিএনপি ও জামাতের ইন্ধনেই যে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছিল – এই মত প্রশ্নাতীত নয়৷''
মার্কিন সিনেটে তাঁর লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর চালানো ১১টি গুরুতর হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট বা আইএস৷ এছাড়া ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও আল-কায়েদা বাংলাদেশের অন্তত ১১ জন প্রগতিশীল লেখক ও ব্লগারকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে৷ অথচ এরপরেও শেখ হাসিনার সরকার এ সব ঘটনায় আইএস-এর সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে এবং এ সমস্ত সহিংসতার জন্য ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলকে দায়ী করেছে৷''
বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও সহনশীল রাষ্ট্র হিসেবেও উল্লেখ করেছেন ক্ল্যাপার৷ তবে ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে এবং একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচারের বিষয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে মনে করেন তিনি৷
বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রসঙ্গে মানবাধিকার নেতা এবং জঙ্গি বিষয়ক গবেষক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমর পর্যবেক্ষণ হচ্ছে বাংলাদেশে জঙ্গি এবং উগ্রবাদ এর মধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে৷ এর প্রধান কারণ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতন্ত্রিকভাবে কাজ করতে না দেয়া৷ সাধারণ নিয়মেই দমন-পীড়ন যেখানে বেশি থাকে, সেখানে জঙ্গিবাদ সুযোগ নেয়৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘শুধু জঙ্গিবাদ নয়, যে কোনো ধরনের উগ্রবাদ এখানে মাথাচাড়া দেয়ার যথেষ্ঠ আশঙ্কা আছে৷''
নূর খানের কথায়, ‘‘বাংলাদেশে আইএস মনোভাব সম্পন্ন জঙ্গিরা রয়েছে৷ এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই৷ নানা জঙ্গি গ্রুপ নানা নামে তৎপর বাংলাদেশে৷ তাই সরকারের উচিত হবে প্রকৃত তথ্য গোপন না করা৷''
তাঁর মতে, ‘‘প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গি মোকাবেলায় কাজ করতে হবে৷ তবে এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন গণতান্ত্রিক পরিবেশ৷''
বন্ধু, আপনি কি নূর খানের সঙ্গে একমত? জানান মতামত, নীচের ঘরে৷