সক্রিয় জঙ্গিরা
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪২০০৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশে মোট পাঁচটি জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়৷ এগুলো হলো: জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি), হরকাতুল জিহাদ, শাহদাতই আল হিকমা এবং হিযবুত তাহরীর৷ কিন্তু এরপরও তাদের তত্পরতা বন্ধ হয়নি৷ এ পর্যন্ত পুলিশ ও ব়্যাব বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের প্রায় ৩ হাজার সদস্য আটক করলেও, তাদের একটা বড় অংশ জামিনে ছাড়া পেয়ে নতুনভাবে তত্পর৷ বিশেষ করে, হিযবুত তাহরীর প্রায়ই ঢাকায় ঝটিকা মিছিল ও সমাবেশ করে তাদের অস্তিত্বের জানান দেয়৷ প্রায়ই তাদের পোস্টার এবং প্রচার-পত্র চোখে পড়ে৷ নিজস্ব ওয়েবসাইটে তাদের বাংলাদেশে তত্পরতার খবর পাওয়া যায় নিয়মিত৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও তাদের সদস্যদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়৷ প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক এই জঙ্গি সংগঠনটি বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২০টি দেশে নিষিদ্ধ৷
এদিকে জেএমবির শীর্ষ ছয়জন নেতার ফাঁসির পরও সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব এবং কৌশলে কাজ করছে৷ তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে তারা তার প্রমাণ রেখেছে৷ হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নান কারাগারে থাকলেও তাদের সদস্যরা সক্রিয়৷ আগে তারা একবার নির্বাচন কমিশনে ভিন্ন নমে নিবন্ধন নিয়ে প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসার চেষ্টাকরে ব্যর্থ হয়৷
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রশীদ (অব.) ডয়চে ভেলেকে জানান, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলো এখন ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করছে৷ আবার সুযোগ বুঝে তারা একই ছাতার নীচে চলে আসবে৷ তিনি মনে করেন , আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির হুমকির পর বাংলাদেশের জঙ্গিরা উজ্জীবিত হবে এটাই স্বাভাবিক৷ জেএমবির রবিবারের হামলা তারই ফল হতে পারে৷
তিনি বলেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের বাইরেও বাংলাদেশে ৩৭টি ছোট-বড় জঙ্গি সংগঠন কাজ করে বলে গবেষণায় দেখা গেছে৷ তিনি মনে করেন, এমনও হতে পারে নিষিদ্ধ হওয়ার পর জঙ্গি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নানা নামে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করছে৷
ব্রিগেডিয়ার রশীদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কয়েক হাজার জঙ্গিকে বিভিন্ন সময় আটক করলেও নিয়মিত মনিটরিং নেই৷ ফলে তারা আটকের পর আবারো ছাড়া পেল কিনা – তার খোঁজ রাখেন না তাঁরা৷ ফলে জঙ্গিরা থেকেই যান৷ অন্যদিকে জঙ্গিদের ব্যাপারে কোনো কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মদদ আছে৷ তাই তারা সক্রিয় থাকতে পারে৷ তাঁর কথায়, রাজনৈতিক ঐক্যমত ছাড়া জঙ্গি নির্মূল সম্ভব নয়৷