1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এইডস রোগীদের ‘গোপন জীবন'

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১ ডিসেম্বর ২০১৫

এইচআইভি ভাইরাস বা এইডস রোগে আক্রান্তদের এখনও একঘরে করে রাখা হচ্ছে বাংলাদেশে৷ চিকিৎসা নিতে গিয়ে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তাঁরা৷ প্রচলিত ধারণা ও কুসংস্কারের কারণে এ রোগের জন্য আজও দায়ী করা হচ্ছে, হেয় করা হচ্ছে তাঁদের৷

https://p.dw.com/p/1HFK4
Symbolbild HIV Medikamente Therapie UN
ছবি: picture-alliance/dpa/L.Bo Bo

[No title]

বিশ্ব এইডস দিবসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন যে, পরিস্থিতি বদলাচ্ছে৷ বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে এইডসমুক্ত করা হবে৷

‘আশার আলো' নামে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঢাকায় এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের কাজ করছে৷ তারা এ পর্যন্ত ২৫ জনকে পুনর্বাসন এবং এইডস রোগে আক্রান্ত দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে চিকিৎসা দিয়েছে৷ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক হাবিবা আক্তার ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এইডসে আক্রান্তরা আমাদের সমাজে এখনো নিন্দিত৷ তাই তাঁদের গোপনেই চিকিৎসা করা হয়৷ এছাড়া এ রোগে যাঁরা আক্রান্ত হন, তাঁরাও সে কথা গোপন রাখেন৷ যদি কোনোভাবে পরিচয় প্রকাশ হয়ে যায়, তাহলে তাঁদের সমস্যা হয়৷ অনেককে তো বাড়ি এবং এলাকাও ছাড়তে হয়েছে৷''

হাবিবা আক্তারের কথাতেই বোঝা যায় যে বাংলাদেশে এইডস রোগীরা এখনও এক গোপন জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছেন৷

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণের হার এখনও শতকরা ০ দশমিক ১ ভাগের নীচে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১ শতাংশেরও কম৷ ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে নতুন করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬৯ জন৷

আর এ সময়ে এই ভাইরাস সংক্রমণের পর এইডস রোগ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৯৫ জনের৷ এছাড়া ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত, অর্থাৎ ১৪ বছরে মোট এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ১৪৩ জন এবং এইডস রোগে মৃত্যু হয়েছে ৫৬৯ জনের৷

যাঁরা এইচআইভি-তে নতুন সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের শতকরা ৭৩ ভাগ পুরুষ, ২৫ ভাগ নারী এবং ২ ভাগ ‘ট্রান্সজেন্ডার' মানুষ৷

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, ‘‘২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে এইচআইভিমুক্ত দেশে পরিণত করতে সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে৷ এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সিলিং, আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য পজেটিভ লিভিং কাউন্সিলিং, পুষ্টি, চিকিৎসা এবং কাউন্সিলিং-এর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ স্থাপন করা হয়েছে ন্যাশানাল এইডস কন্ট্রোল সেন্টার-ও৷''

তবে তিনি জানান, ‘‘বাংলাদেশকে এইডসমুক্ত করতে হলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে৷ তাছাড়া আক্রান্তদের প্রতি আমাদের সহানুভূতিশীল হতে হবে৷ এ জন্য সরকার ব্যাপক প্রচার প্রচারণার উদ্যোগ নিয়েছে৷''

বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাতটি মেডিক্যাল কলেজসহ মোট ১২টি সরকারি হাসপাতালে এইচআইভি রোগ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা ও এইচআইভি আক্রান্তদের বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণসহ বিভিন্ন সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে৷ এ সব ছাড়াও বেশ কয়েকটি বেসরকারি সাহায্য সংস্থা বা এনজিও-র মাধ্যমে এইচআইভি আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে৷

অন্যদিকে ‘আশার আলো'-র নির্বাহী পরিচালক হাবিবা আক্তার জানান, ‘‘এইচআইভি আক্রান্তদের যদি সার্জারির মতো চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তার ব্যবস্থা বাংলাদেশে নেই৷ এমনকি এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ এবং এইডস রোগ সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণাও সীমিত৷''

তাঁর কথায়, ‘‘আশার আলোসহ তিনটি এনজিও এইচআইভি আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করছে৷ নিজেদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিয়ে এই ভাইরাসে বা এইডস রোগে আক্রান্তদের পুনর্বাসনও করছে তারা৷ কিন্তু সরকারি পর্যায়ে তাদের পুনর্বাসন বা চাকরির কোনো ব্যবনস্থা নেই৷''

আপনার প্রতিবেশী এইডস-এ আক্রান্ত হলে আপনি কী করবেন? জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান