টেস্ট নিয়ে যা বললেন তাঁরা
২৪ অক্টোবর ২০১৬পঞ্চম দিনে জেতার জন্য ৩৩ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের৷ আর ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ২ উইকেট৷ মাত্র ২০ মিনিটেই তা পেয়ে যায় ইংলিশরা৷ ২২ রানে হেরে যায় টাইগাররা৷ রানের দিক বিবেচনায় নিলে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে কম রানের ব্যবধানে হারা, জানিয়েছে ইএসপিএনক্রিকইনফো৷
টেস্টে বাংলাদেশের সাহসী প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে স্কাই স্পোর্টস৷
ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে লিখেছেন, প্রথম টেস্টের ফলাফলকে বাংলাদেশের অবশ্যই অগ্রগতি হিসেবে ধরা উচিত৷ ক্রিকেটে উন্নয়নের দিকে চলার পথে এমন ফল আসতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
ফেসবুক ব্যবহারকারী আবু নাঈম এই টেস্টে বেশকিছু ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন৷ যেমন, ‘‘প্রায় ১৪ মাস পর টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেও ইংল্যান্ডের মতো প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়া, ৩০০'র নীচে দুইবার তাদের অলআউট করা, স্পিন, টার্ন আন ইভেন বাউন্স, ডাস্টি পিচে প্রায় ২৮৬ রান চেজ করে ফেলা, কুক, রুটদের কপালে ভাঁজ নিয়ে চতুর্থদিন টেনশনে হোটেলে ফেরা, ৯৯টি টেস্ট খেলা ব্রডের সেরা পাঁচ টেস্টের একটি চট্টগ্রাম টেস্ট! ইংলিশ কমেন্টেটরদের স্তুতি পাওয়া! বিদেশি বড় বড় সংবাদমাধ্যমে (সিডনি হোরাল্ড মর্নিং, টেলিগ্রাফ, সিএ ইত্যাদি) স্পোর্টস অংশে গুরুত্ব সহকারে চট্রগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের ফাইটিং স্পিরিট নিয়ে প্রশংসা! বাংলাদেশের স্তুতি বর্ণনা করে বিভিন্ন গ্রেটদের টুইট, অলআউট হবার আগে পর্যন্ত ফাইট দেওয়া - পজিটিভিলি নিলে পজিটিভ আছে অনেক কিছু৷ কাঁপুনি তো ইংলিশরাও খেয়েছে, স্বীকার করেছে তাদের চোখ মুখের ছবি!''
নাঈম ইংলিশ ক্রিকেটারদের যে ধরণের ছবির কথা বলছেন, সেরকম একটি ছবি প্রকাশ করেছে বিবিসি স্পোর্ট৷ বাংলাদেশকে হারানোর পর ইংলিশ ক্রিকেটাররা যে বেশ উত্তেজিত, ছবিতে তা স্পস্ট৷ ছবিটি টুইটারে শেয়ার করে বিবিসি স্পোর্ট লিখেছে, ‘‘অসাধারণ এক ম্যাচ ছিল এটি৷''
বাংলাদেশের শেষ দু'টি উইকেট নেয়া বেন স্টোকসও এই ম্যাচে জিততে পেরে খুব খুশি৷
ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের ক্রিকেট বিষয়ক লেখক নিক হুল্ট লিখেছেন, ‘‘স্টোকস ইংল্যান্ডকে বাঁচিয়েছে৷ দারুণ পারফরম্যান্স৷ হৃদয় ভেঙেছে বাংলাদেশের৷''
ক্রিকেট নিয়ে লেখালেখি করা পিটার মিলার বলছেন, ‘‘বাংলাদেশে হওয়া ৫২টি টেস্টের মধ্যে এই প্রথম দুই দলেরই সব উইকেটের পতন হয়েছে৷''
এই টেস্টের নানান দিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি একটি ছবি নিয়েও সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা চলছে৷ খেলা শেষে সাব্বির যখন হতাশায় মাঠেই বসে পড়েছেন, তখন তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছেন ইংলিশ ক্রিকেটার জো রুট৷ ইংল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচের সময় ঘটে যাওয়া দু'টি অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে কোনো কোনো ইংলিশ ক্রিকেটারের প্রতি বাংলাদেশি সমর্থকদের কিছুটা ক্ষোভ ছিল৷ তবে আবু নাঈম তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে এই ছবি (উপরে যেটি দেখতে পাচ্ছেন) সম্পর্কে লিখেছেন, ‘‘চলমান সিরিজে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের আচরণ এতটাই খারাপ ছিল যে ওদের উপর থেকে মন উঠে গিয়েছে... তবে আজ সকালে তাইজুল আউট হওয়ার পর আমাদের সাব্বিরের মন তখনই ভেঙে গিয়েছিল, হতাশ হয়ে এইভাবে বসে গিয়েছিল আর তখন স্টুয়ার্ট ব্রড (এবং পরে রুট) তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য হয়ত চেষ্টা করেছে! এটাই ক্রিকেট! এই জন্য ক্রিকেটকে ভদ্রলোকের খেলা বলা হয়!''
জুনাইদ পাইকার টারগারদের খেলার প্রশংসা করে আগামী টেস্টের জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন৷ দিদারুল ভুঁইয়া লিখেছেন, ‘‘১৪ মাসের গ্যাপ না থাকলে আমরা এখন টেস্টেও বাঘ হয়ে উঠতে পারতাম৷ এ টেস্ট হয়তো জিততেই পারতাম৷''
তবে আদনান সাদেক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘পরাজয়ের মধ্যেও অনেক ধরণের শিক্ষা আছে, নানাবিধ পজিটিভ দিক খুঁজে পাওয়া যায়৷ তবে পরাজয়ে প্রথম শিক্ষা হলো, ‘আমরা পরাজয় থেকে শিক্ষা নেই না'৷''
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী