ব়্যাবের দুই কর্মকর্তা রিমান্ডে
১৭ মে ২০১৪দু'জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে৷
হাইকোর্টের নির্দেশের ৬ দিন পর শনিবার ভোর রাতে ব়্যাব-১১ এর সদ্য সাবেক দুই কর্মকর্তাকে সেনানিবাসের ‘লগ এরিয়া' থেকে মিলিটারি পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করে পুলিশ৷ শনিবার তাদের আদালতে হাজির করে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন৷ গ্রেফতারকৃতরা হলেন ব়্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ এবং মেজর আরিফ হাসেন৷ কিন্তু একই ঘটনায় নৌ বাহিনীর কর্মকর্তা লে. কমান্ডার এম এম রানাকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি৷
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর দুইটার দিকে আটক হওয়া দুই ব়্যাব কর্মকর্তাকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে হাজির করা হলে তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না৷ পুলিশের পক্ষে আদালতকে জানানো হয়, দুই কর্মকর্তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে৷ নরায়ণগঞ্জের সাতজনকে অপহরণ এবং হত্যার ঘটনায় ব়্যাবের এই দুই কর্মকর্তার জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে৷ এনিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য ও প্রমাণের জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন৷
‘৬ কোটি টাকা ঘুস'
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়৷ ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে৷ এরপর নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নজরুলের প্রতিপক্ষের কাছে থেকে ৬ কোটি টাকা ঘুস নিয়ে ব়্যাবের ঐ তিন কর্মকর্তা সাতজনকে অপহরণ ও হত্যা করেছে৷ এই অভিযোগ ওঠার পরপরই অবশ্য পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি৷ তবে তাদের ব়্যাব থেকে প্রত্যাহার করে সেনা ও নৌ বাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়৷
হাইকোর্ট গত ১১ মে তিন ব়্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয়৷ আদেশে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে কোন সুনির্দষ্ট মামলা না থাকলে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে হবে৷ হাইকোর্টের আদেশের ৬ দিন পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেনা সদর দপ্তরের অনুমতি নিয়ে তাদের মধ্যে দুই জনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হলো৷ কিন্তু নৌ বাহিনীর লে. কমান্ডার এম এম রানাকে গ্রেফতার করা যায়নি৷ পুলিশ জানায়, তাঁকে অবসর দেয়ার পর তিনি আবাসস্থল থেকে পালিয়েছেন৷ তবে তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে৷ এম এম রানা ব়্যাব-১১ এর নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের প্রধান ছিলেন৷
ব়্যাবের ক্যাম্প তল্লাশির দাবি
নিহত নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, ‘‘অপহরণের পর নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পে নিয়েই সাতজনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেল দেয়া হয়৷''
তিনি বলেন, ‘‘লাশ নদীতে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য যেসব বস্তা, ইট এবং দড়ি ব্যবহার করা হয়েছে তা সবই নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের৷'' তার দাবি, ‘‘রানাকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে৷ তাকে গ্রেফতার করা না হলে অনেক তথ্য জানা যাবে না৷''
শহিদুল ইসলাম একই সঙ্গে হত্যার আলামত উদ্ধারে নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পে তল্লাশির দাবি জানান৷ তিনি অভিযোগ করেন, একইভাবে প্রধান আসামি নূর হোসেনেকেও পলাতে সহায়তা করা হয়েছে৷