1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বর্ষার অর্থনীতি, রাজনীতি

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৮ জুন ২০১৩

এ বছর নির্ধারিত সময়ের একমাস আগেই গোটা ভারতে বর্ষা এসে পড়ায় শুধু অর্থনীতি নয়, রাজনৈতিক মহলেও এক ব্যাপক আশার সঞ্চার হয়েছে৷ কৃষিজীবীদের আশা বিপুল ফলনের আর সরকারের আশা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখে নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়ার৷

https://p.dw.com/p/18rGT
ছবি: AP

গোটা দেশে বর্ষা এসে গেছে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক মাস আগেই৷ সাধারণত ভারতে বর্ষা আসে জুলাই মাসের মাঝামাঝি৷ কিন্তু এ বছর এসেছে জুনের মাঝামাঝি৷ আবহাওয়া দপ্তর বলছে, বর্ষা আগে আসবে জানা ছিল, তবে এত আগে আসবে জানা ছিল না৷ ফলে বিপুল কৃষি উৎপাদনের একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন ফসলের, যেমন, ধান, তেলবীজ, আখ, সয়াবিন, ভুট্টা, কাপাস ইত্যাদি৷ হবে না? ভারতের যে প্রায় ৫০-৫৫ শতাংশ চাষযোগ্য জমি বৃষ্টি নির্ভর!

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষা আগে আসায় গ্রীষ্মকালীন ফসল বোনার কাজ আগেই শুরু হতে পারবে৷ এবং ফসল পরিণত হবার যথেষ্ট সময় পেলে উৎপাদনও হবে ভালো৷ সাধারণত, ভালো বৃষ্টি হলে খরা এলাকার মাটি নরম হয়৷ পশ্চিম ভারতে গত চার দশক ধরে খরাবস্থা চলছে৷ পশ্চিম মহারাষ্ট্রের প্রধান ফসল আখ৷ গত বছর আখ চাষে মন্দা ছিল৷ তবে এবারের বর্ষা তা পুষিয়ে দিতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়৷

Reisanbau in Indien
কৃষকরা বিপুল ফলন আশা করছেনছবি: picture-alliance/dpa

ভারতে কৃষিজীবীদের সংখ্যা ২৩ কোটি৷ ধান, আখ ও কাপাস চাষীদের সংখ্যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম৷ এঁরা সবাই বৃষ্টি নির্ভর বলে বর্ষা শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় ৮ লাখ হেক্টরে ধানের বীজ, ১৬ লাখ হেক্টরে তেলবীজ, ৪০ লাখ হেক্টরে আখ এবং ১৬ লাখ হেক্টরে কাপাস বোনার কাজ প্রায় শেষ করে এনেছেন তাঁরা৷

ভারতের অর্থনীতি এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম, যার মেরুদণ্ড কৃষি৷ ২০ হাজার কোটি ডলারের অর্থনীতির ৩০-৪০ শতাংশ কৃষি-কেন্দ্রিক৷ গোটা দেশে ভালো বর্ষার সম্ভাবনায় অর্থনীতি চাঙ্গা হবার আশা তাই উজ্জ্বল৷ সরকার মনে করছে, এতে দ্রব্যমূল্য তথা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে৷ সেই ছবিটা সামনে রেখেই ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক হালে সুদের হার রেখেছে অপরিবর্তিত৷ তার ওপর আগামী বছর দেশে সাধারণ নির্বাচন৷ তাই মনমোহন সিং সরকারকে ভোটের বৈতরণি পার করাতে এবারের বর্ষা কংগ্রেসের পক্ষে হতে পারে আশীর্বাদ৷

এখানেই শেষ নয়৷ আগাম বর্ষা বিদ্যুতের চাহিদা কম করতে সাহায্য করবে৷ সেচের জন্য কৃষকদের বিদ্যুৎ-চালিত পাম্প ব্যবহার করার দরকার পড়বে না৷ খরচ বাঁচবে তাঁদের৷ আর বিদ্যুৎ সরবরাহ ভালো হলে দ্রব্যমূল্যের ওপরও তার প্রভাব পড়বে৷ দিল্লিতে মাথাপিছু বিদ্যুৎ খরচ দেশের মধ্যে সর্বাধিক৷ বর্ষা আসার আগে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৫৬৫৩ মেগাওয়াট৷ বর্ষা শুরু হবার পর তা কমে দাঁড়ায় ৪৫০০ মেগাওয়াট৷

তবে বর্ষা ভারতের মতো দেশে অবিমিশ্র আশীর্বাদ নয়৷ বন্যা এবং ভূমিধ্বসে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি বড় কম হয় না৷ উত্তরাখন্ডে ইতিমধ্যেই বন্যায় এবং ভূমিধ্বসে মারা গেছে ৫০ জন, নিখোঁজ আরো ৬০৷ এছাড়াও আটকা পড়েছে বহু মানুষ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, এর প্রধাণ কারণ হিমালয় অঞ্চলে অবাধে বনভূমি ধংস করা এবং পাহাড় ফাটিয়ে যথেচ্ছ বাঁধ নির্মাণ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য