1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানি - পরিবোশ

২৭ এপ্রিল ২০১২

বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার৷ এই দিকটিতে জার্মানি তাক লাগিয়ে দিল বিশ্বকে৷ ইউরোপের মোট ছয়টি দেশ প্রকৃতির প্রতি সদাচরণ করছে এইভাবেই৷ পিছিয়ে রয়েছে পূর্ব ইউরোপের কিছু দেশ৷ যেমন, বুলগারিয়া৷

https://p.dw.com/p/14lhi
ছবি: th-photo-Fotolia.com

একজন ব্যক্তি প্রতি বছরে ৫৮৩ কিলোগ্রাম বর্জ্য পদার্থ তৈরি করে থাকে জার্মানিতে৷ তাহলে গোটা দেশ জুড়ে তার পরিমাণ কী বিপুল হতে পারে, তার ধারণা করাটাও ভয়ংকর৷ সেই বিপুল মাপের বর্জ্যের প্রায় ১০০ শতাংশ জার্মানি পুনর্ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে৷ অর্থাৎ এই জার্মানিতে বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থাপনা কাজ করছে দুর্দান্ত সফলভাবে৷ এই পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে জার্মানি এতটাই সফলভাবে কাজটা করে চলেছে যে বর্জ্য পদার্থ মাটিতে পুঁতে দেওয়ার যে চিরাচরিত প্রথা চলে আসছে এই দুনিয়ায়, যার ফলে প্রকৃতির ভয়াবহ ক্ষতি করে চলেছে মানব সমাজ, সেটাকে নতুন দিশা দিতে পেরেছে জার্মানি৷ গোটা বিশ্বের সামনে এ এক অসামান্য উদাহরণ৷

ছয়টি দেশের সাফল্য

শুধু জার্মানি একা নয়, এই কাজে সাফল্য পেয়েছে আরও কয়েকটি পশ্চিম ইউরোপীয় দেশ৷ সেগুলি হল বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া, সুইডেন এবং নেদারল্যান্ডস৷ তবে এই ছয়টি দেশের মধ্যে একমাত্র জার্মানিতেই দেখা গেছে প্রায় ১০০ শতাংশ সাফল্য৷ অন্যান্য দেশগুলিও রয়েছে কাছেপিঠেই৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিবেশ বিষয়ক কমিশনার ইয়ানেস পোতচনিক সম্প্রতি এই তথ্য জানিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন জার্মানি সহ এই ছয়টি দেশকে৷ তিনি জানাচ্ছেন, বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করে প্রকৃতির সুরক্ষাই শুধু নয়, এই কাজের মাধ্যমে এই দেশগুলিতে শিল্পক্ষেত্রের সম্প্রসারণ যেমন হয়েছে, তেমনই আবার প্রচুর নতুন চাকরিও তৈরি হয়েছে৷ ফলে কর্মসংস্থানেরও সুবিধা করে তুলছে এই পদ্ধতি, পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি৷

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

এবার দেখা যাক, ঠিক কীভাবে জার্মানি এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালাচ্ছে৷ প্রাপ্ত তথ্য জানাচ্ছে, জার্মানি তার গোটা দেশের অতি সক্রিয় পৌরসভা ব্যবস্থার সাহায্যে দৈনন্দিনের বর্জ্য পদার্থ, যথা কাগজ থেকে প্লাস্টিক বা জৈব অজৈব বর্জ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করে ফেলে তার ৪৫ শতাংশ পুনর্ব্যবহারের কাজে লাগায়৷ বাকি বর্জ্যের ৩৮ শতাংশ পুড়িয়ে ফেলা হয় আর পড়ে থাকা ১৭ শতাংশ মত বর্জ্য কাজে লাগানো হয় সার তৈরি করতে৷ মাত্র তিন শতাংশ বর্জ্য মাটিতে পুঁতে দেয় জার্মানি৷ এই পুরো বিষয়টা শুনতে সাধারণ মনে হলেও এর নেপথ্যে একটি মস্তবড় ব্যবস্থাপনা কাজ করছে৷ দিনের শেষে যার কার্যকারিতার ফলে দেখা যায়, প্রকৃতিও যথেষ্ট উপকৃত হচ্ছে এর ফলে৷

Glas Recycling
‘রিসাইক্লিং’ বা পুনর্ব্যবহারের আগে ভাঙা কাচের বোতলছবি: picture-alliance/dpa

দুই মিলিয়ন মানুষের চাকরি

ছয়টি দেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দুই মিলিয়ন মানুষের চাকরির সংস্থান হয়েছে৷ জানাচ্ছে ইউরোপের পরিচিত পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট৷ আরও জানা যাচ্ছে, এর ফলে এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে মোট যে পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়েছে, সেটাও বিশাল৷ ২০০৮ সালের হিসাব বলছে, সে বছরে সেটা ছিল ১৪৫ বিলিয়ন ইউরো৷ মার্কিন ডলারের হিসেবে ১৯০ বিলিয়ন ডলার৷ ইইউ-র এক বিশেষজ্ঞ বলছেন, অর্থের পরিমাণটা আরও বেশি হয়েছে সম্প্রতি৷ কারণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এখন অনেক নতুন সংস্থা মনোযোগী হয়েছে আর কাজও হচ্ছে বেশি৷

পূর্বের ছবি

জার্মানি যেখানে মাত্র তিন শতাংশ বর্জ্য মাটিতে পুঁতে দেয়, বুলগারিয়া সেখানে ১০০ শতাংশ বর্জ্য মাটিতে পোঁতে৷ বলা বাহুল্য তার ফলে প্রকৃতির বিপুল ক্ষতি তারা ঘটিয়ে চলেছে৷ তথ্য বলছে, পূর্ব ইউরোপের বহু দেশেই এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিকমত কাজ করে না৷ অধিকাংশ দেশই এ বিষয়ে উদাসীন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন সে কারণেই ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলির মধ্যে এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করার একটা বিশেষ নীতি ঘোষণা করেছে৷ যে নীতি মানা বাধ্যতামূলক৷ ইইউ-র পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৫ টি দেশ যদি এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি অনুসরণ করে সঠিকভাবে, সেক্ষেত্রে আরও চার লক্ষ মানুষের চাকরি হবে এই ক্ষেত্রে৷ শুধু সেখানেই শেষ নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধুমাত্র বর্জ্য থেকে আয় করবে বছরে আরও ৪২ বিলিয়ন ইউরো৷

এরপরে তো বলতেই হবে যে, বর্জ্যের সম্ভাবনা তাহলে বিশাল!

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য