বন শহরে বেটোফেন উৎসব
১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯বেটোফেনের জন্ম এই বন শহরে ১৭৭০ সালে৷ মৃত্যুবরণ করেন ১৮২৭ সালে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায়৷
পাশ্চাত্যের ধ্রুপদী সংগীতের অঙ্গনে, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই মহান শিল্পী সৃষ্টি করেছেন একাধিক সিম্ফনি, পিয়ানো কনসার্ট, স্ট্রিং কোয়ারটেট আর সোনাটা৷ রাজনৈতিক এবং সামাজিক চেতনাও প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর সংগীতে ৷
প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত নির্দেশক এবং বেটোফেনের গভীর অনুরাগী ফ্রানৎস লিস্ট এর উদ্যোগে ১৮৪৫ সালে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় বেটোফেন উৎসব৷ তারপর বহু চড়াই-উৎরাই পার হয়ে আজ অবধি তার অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি৷ পেয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা৷
এবছরের আন্তর্জাতিক বেটোফেন উৎসবের মটোঃ ‘আলোর মেলায় - শিল্পীর রোমান্টিক অভিব্যক্তি'৷ সংগীত আঁধারের মাঝেও আলোর ছটা ছড়িয়ে দিতে পারে৷ চরম দুঃসময়েও মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলতে পারে৷
জার্মানি সহ বিশ্বের বহু খ্যাতনামা সংগীতকার অংশ গ্রহণ করছেন এই উৎসবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে৷ যেমন সংগীত নির্দেশক ইঙো মেত্সমাখার ও জার্মান সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা, ভ্যালেরি গেরগিভ ও লন্ডন সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা বা গুস্তাভো ডুডামেল ও গ্যোটেবর্গ সিম্ফনি৷ আরোও আছেন বিশিষ্ট চেলো বাদক সল গাবেতা, বেহালাবাদক ভিক্টরিয়া মুলোভা বা স্টার পিয়নোবাদক মউরিসিও পলিনি ছাড়াও বহুমুখী পার্কাশন শিল্পী মার্টিন গ্রুবিংগার বা তারকা বেহালাবাদক ডেভিড গেরেট এর পরিবেশিত সুর ঝংকারে মুগ্ধ হয়েছেন শ্রোতা-দর্শকেরা৷
জার্মান- মার্কিন শিল্পী ডেভিড গেরেট, তাঁর বেহালায় ধ্রুপদি ও পপ্ সংগীতের অসাধারন মিশ্রন তুলনাহীন৷
এক মাসের এই উৎসবে রয়েছে ১৫০টি অনুষ্ঠান৷ বেঠোফেন ও তাঁর সমসাময়িক সুরকারদের সৃষ্ট কনসার্ট ছাড়াও থাকছে নানা সময়ের নানা ধরণের সংগীতানুষ্ঠান৷ বারোক সংগীত থেকে শুরু করে পপ্, জ্যাজ এবং অপেক্ষাকৃত চটুল শ্লাগার পর্যন্ত৷ আরোও রয়েছে বিভিন্ন মেজাজের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷আছে প্রবন্ধ পাঠ, আলোচনা অনুষ্ঠান চিত্রপ্রদর্শনী ইত্যাদি৷উৎসবের বিশেষ অনুষ্ঠানে আছে বেঠোফেন ও তাঁর সংগীত নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা, ‘লুক এট বেঠোফেন‘৷ বিশেষভাবে তরুণ শিল্পীরা বেঠোফেনের প্রতি তাঁদের দৃষ্টি চলচ্চিত্রে রূপায়িত করেছেন৷
বন শহরের বিভিন্ন স্হানে অসংখ্য সংগীতানুষ্ঠানের সুরলহরী এবং বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রাচুর্যে, সংগীতপ্রেমী বা দর্শক শ্রোতারা কখন কোন অনুষ্ঠানে যাবেন সেটা ঠিক করতেই যেন একটা সমস্যায় পড়েন৷
প্রতিবেদক: মারুফ আহমেদ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক