1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট হবেই!

সমীর কুমার দে ঢাকা
১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

পদ্মার পাড়েই হবে নতুন বিমানবন্দর, যার নাম হবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’৷ সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে বিমানবন্দরটিতে৷ এ মুহূর্তে চলছে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ, যা ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা৷

https://p.dw.com/p/2USe0
ইতিহাসের পাতা থেকে ঢাকা বিমানবন্দর
ছবি: Positive light

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নতুন বিমানবন্দরটি হতে আরো কিছু সময় লাগবে৷ এখন চলছে ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি'-র কাজ৷ জাপানি একটি প্রতিষ্ঠান এই কাজ করছে৷ তাদের ১৮ মাস সময় দেয়া হয়েছে৷ প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করেছে মাত্র এক মাস আগে৷'' নতুন বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে যে বিমানবন্দরটি আছে, ২০১৮ সালের মধ্যেই সেটির কার্যক্ষমতা অনেকাংশে হারিয়ে যাবে৷ এই কারণে নতুন বিমানবন্দরের প্রয়োজন৷''

বলা বাহুল্য, বিদ্যমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের আধুনিকীকরণে আগ্রহী নয় সরকার৷ বিমান মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, স্থান নির্ধারণে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের বিস্তারিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা' শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়৷ এর আওতায় এখন আবার নতুন করে চারটি স্থান চিহ্নিত করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে৷ সেগুলো হচ্ছে, মাদারীপুরের শিবচরের চর জানাজাত, ঢাকার দোহারের চরবিলাসপুর, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কেয়াইন ও লতব্দী এলাকা৷ তবে পদ্মা সেতু থেকে দূরত্ব কম থাকায় চর জানাজাতকে তালিকার প্রথমে রাখা হয়েছে৷ সরকারের শীর্ষমহলও চায় পদ্মার পাড়ে চরজানাজাতেই বঙ্গবন্ধুর নামে এই বিমানবন্দরটি হোক৷

চারটি স্থান নির্বাচনের বিষয়ে কার্যপত্রে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য বেসামরিক পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তম যোগাযোগ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের বিষয়টি সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনপূর্বক স্থান নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়৷ উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের লক্ষ্যে মোট নয়টি স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করে ঢাকা থেকে দূরত্ব, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জমির পর্যাপ্ততা, আন্তর্জাতিক রুট, সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, পুনর্বাসন, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করে এই চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়েছে৷ চারটির মধ্যে আবার শীর্ষে আছে চর জানাজাত৷

জানা গেছে, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হলে নিয়োগ দেওয়া হবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এবং দ্রুত শেষ করা হবে টেন্ডার প্রক্রিয়া৷ সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের জন্য প্রাক্কলিত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা৷ এর আগে মন্ত্রীসভায় নীতিগত অনুমোদনের সময় প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছিল ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত৷ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা৷ অথচ ২০১৬ সালের শেষে এসেও ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শেষ হয়নি৷ ধারণা করা হচ্ছে, এটি ২০১৭ সালে এসে শেষ হবে৷

বাংলাদেশ বিমানের সাবেক বোর্ড সদস্য ও এভিয়েশন নিয়ে বের করা পাক্ষিক ‘মনিটর'-এর সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নানা কারণেই হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটিতে সবকিছু ঠিকঠাক করা যাচ্ছে না৷ আগে এই এয়ারপোর্টের পাশে জনবসতি তেমন ছিল না৷ এখন উত্তরাতে আধুনিক শহর গড়ে উঠেছে৷ তাছাড়া কয়েকটি জেলায় যাতায়াতের একমাত্র সড়ক বিমানবন্দরের সামনের রাস্তাটি৷ এখানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সম্ভব নয়৷ পাশাপাশি এই বিমানবন্দরে নিরাপত্তাও পুরোপুরি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে৷ তাছাড়া এখানে একটি রানওয়ে কোনো কারণে বন্ধ হয়ে গেলে বিমান উঠানামাই বন্ধ হয়ে যায়৷ ফলে বাংলাদেশের স্বার্থেই নতুন একটি এয়ারপোর্ট করা প্রয়োজন৷ আর সেই কাজটি দ্রুত করা গেলেই ভালো৷''

এর আগে ২০১০ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালকে নতুন বিমানবন্দরের স্থান হিসেবে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়৷ কিন্তু বিমানবাহিনীর আপত্তির কারণে সেটা বাদ দেওয়া হয়৷ এরপর সরকার আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে৷ কিন্তু এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়৷ পরে বিমানবন্দরের জন্য আটটি স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পরিদর্শন ও পর্যালোচনা করা হয়৷ তার প্রথমেই মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চর জানাজাত৷

প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বিমান চলাচল খাতে ভবিষ্যতের বর্ধিত চাহিদা পূরণের লক্ষ্য সামনে রেখে রাজধানীর ঢাকার অদূরে একটি নতুন বিশ্বমানের বিমানবন্দর করা দরকার৷ বর্তমান সরকার একে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে৷ দ্রুততার সঙ্গে এর সফল বাস্তবায়নে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে৷ নতুন এ বিমানবন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে একটি বিমান চলাচলের বড় কেন্দ্র (এয়ারলাইন্স হাব) হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে সরকার৷ সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের এক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ ন হ মোস্তফা কামাল৷

বাংলাদেশ বিমানের সাবেক বোর্ড সদস্য কাশেম আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দেশের স্বার্থে নতুন একটি বিমানবন্দর প্রয়োজন৷ বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে অত্যাধুনিক একটি বিমানবন্দর খুবই প্রয়োজন৷ আর এটা তো আয়েরও একটি মাধ্যম৷ নতুন অত্যাধুনিক বিমানবন্দর হলে সেটি থেকে যে আয় হবে, সেটাও কম নয়৷ তাছাড়া বর্তমানে যে বিমানবন্দরটি আছে সেটিকে অত্যাধুনিক করা কঠিন৷ সে কারণেই নতুন এই বিমানবন্দরের পরিকল্পনা৷''

বন্ধু, ‘দেশের স্বার্থে কি সত্যিই একটি নতুন বিমানবন্দরের প্রয়োজন? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য