ফুটবল এখন টাকার খেলা
২০১৭-১৮ ফুটবল মরশুম চলছে৷ ফ্যানরা খুশি, কেননা ফুটবল বাদ দিয়ে আর কতদিন টেকা যায়৷ ওদিকে ক্লাবগুলোও খুশি, কেননা তাদের ট্যাঁক আজ ট্যাঁকশাল; চাইলে একটা কেন, দশটা প্লেয়ার কিনতে পারে...
টাকার বন্যা
বাইশ কোটি বিশ লাখ ইউরো কিংবা ছাব্বিশ কোটি ডলার: নেইমার দা সিলভা সান্তোস জুনিয়র বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিসে ফুটবল খেলতে গেলেন এই মূল্যে৷ স্পেন বা ফ্রান্সের পক্ষে যা সম্ভব ছিল না, সেটা সম্ভব করলেন কাতারের এক শেখ৷ একেই বলে ফুটবলে বিশ্বায়ন৷
ট্যাঁক যেখানে যায়
যেমন ডর্টমুন্ডের প্রতিভাবান খেলোয়াড় উসমানে ডেম্বেলে৷ নেইমারকে বেচার কোটি কোটি ডলার বার্সেলোনায় পৌঁছানোর আগেই বার্সা ডর্টমুন্ডে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, ডেম্বেলেকে রাজি করানোর আশায়৷ যুক্তি অনেক: বার্সা কত বড় ক্লাব, স্পেনের ফুটবলের মানই আলাদা আর সবচেয়ে বড় কথা – সেখানে ডেম্বেলের রোজগার হবে অনেক বেশি!
এ খেলা খেলে কম-বেশি সব ক্লাব
ফুটবলে ট্রান্সফার ফি তো আর শুধু আরব শেখ কিংবা রুশ কোটিপতিদের কল্যাণেই আকাশ ছোঁয়নি, অন্যান্য ক্লাবও কিছু কম যায় না; বা গেলেও, তা শুধু টাকার অঙ্কে৷ বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড যেমন সম্প্রতি ফ্রাইবুর্গের উঠতি স্ট্রাইকার মাক্সিমিলিয়ান ফিলিপকে ডর্টমুন্ডে এনেছে দু’কোটি ইউরো মূল্যে, যা জার্মান ফুটবলের হিসেবে অনেক টাকা৷
সবই আপেক্ষিক
ফুটবল মিলিওনেয়ারদের আয় কত? এ প্রশ্নের সঠিক জবাব পাওয়া মুশকিল৷ তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে, জার্মানির একটি বড় কোম্পানির প্রধান গড়ে বছরে ৬৪ লাখ ইউরো রোজগার করে থাকেন; সে তুলনায় বুন্ডেসলিগার একজন খেলোয়াড় পান গড়ে বছরে ১৯ লাখ ইউরো৷ আর জার্মানি ফুটবল ফ্যানদের রোজগারই বা খারাপ কী? গড়ে বছরে ৪২ হাজার ইউরো৷
শেষ কোথায়?
বুন্ডেসলিগার ১৮টি দলের সব প্লেয়ার মিলিয়ে পান বছরে সাড়ে সাত কোটি ইউরো৷ যুক্তরাজ্যের প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবদের তাদের প্লেয়ারদের খোরপোশ হিসেবে বছরে ১৫ কোটি ২০ লাখ ইউরো মজুদ রাখতে হয়৷ কিন্তু নেইমারের তিন কোটি ইউরোর ‘বেতন’ এবার সকলের হিসেব ভণ্ডুল করে দিয়েছে৷
যা পাওয়া যায়
প্লেয়ারদের জন্য বড় অঙ্কের টাকা যে শুধু স্পন্সরদের কাছ থেকেই আসে, এমন নয়৷ ফ্যানরাও তার অনেকটাই সরবরাহ করে থাকেন৷ হামবুর্গের একজন ফুটবল ফ্যানকে এইচএসভি-র সিজন টিকিটের জন্য ৮০০ ইউরো খরচ করতে হয়৷ এছাড়া ট্রু ফ্যানদের চাই ক্লাবের মাঠে পরার আটপৌরে জার্সি৷ অন্য মাঠে খেলতে যাওয়ার জার্সি, কাপ, প্লেট, প্যান, টোস্টার ইত্যাদি নানা নিত্যব্যবহার্য পদার্থ – সব কিছুর উপর ঝলমল করছে ক্লাবের প্রতীক৷
এখন ক্লাব কেনাটা হলো ফ্যাশন
জার্মানিতে সেটা তত সহজ নয়, কেননা খেলার লাইসেন্স পেতে হলে বুন্ডেসলিগার একটি ক্লাবকে তার নিজের ভোটাধিকারের অন্তত ৫০ শতাংশ নিজের কাছে রাখতে হবে৷ এবার আরো একটি দল এই বেসরকারি নীতিটি লঙ্ঘন করতে চলেছে৷ হানোফার ৯৬-এর প্রেসিডেন্ট মার্টিন কিন্ড তাতে দোষের কিছু দেখেন না৷ তাঁর নিজের কোম্পানি কিন্ড হিয়ারিং এইড তৈরি করে থাকে৷
সবশেষে কিংবা সর্বাগ্রে বায়ার্ন
এবারও সবাই একমত যে, বায়ার্ন মিউনিখ আবার বুন্ডেসলিগা চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছে৷ জার্মান লিগে সবচেয়ে দামি ক্লাব হলো এই বায়ার্ন, যাদের মূল্য ২৪০ কোটি ইউরো৷ বলুন তো, খেলার সঙ্গে তার সম্পর্কটা কি?