প্রশ্নের মুখে টেরেসা মে'র নেতৃত্ব
১২ ডিসেম্বর ২০১৮বুধবার ব্রিটিশ সংসদের অভ্যন্তরীণ সংকট বিষয়ক সংসদ সদস্য গ্রাহাম ব্র্যাডি বলেছেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ওপর অনাস্থা প্রস্তাব আনার জিকির উঠেছে৷ মূলত রক্ষণশীল শিবিরই এই ধুয়া তুলেছে৷
সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত আটটার মধ্যে এই ভোট অনুষ্ঠিত হবে৷ ভোটের পরপরই ফলাফল ঘোষিত হবে বলে জানিয়েছেন ব্র্যাডি৷
রক্ষণশীল নেতা টেরেসা মে বলেছেন, তাঁর কাছে যা আছে তা-ই নিয়ে তিনি এই ভোট মোকাবেলা করবেন৷
ব্র্যাডি জানিয়েছেন, অনাস্থা জানিয়ে অন্তত ৪৮ জন সংসদ সদস্য তাঁর কাছে চিঠি দেয়ায় ভোটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷
সংকটের মূলে ব্রেক্সিট
আগামী ২৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবার জন্য মে যে চুক্তি প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছেন, মূলত তা নিয়েই ব্রিটিশ সংসদে এই বিভক্তি৷
মঙ্গলবার এই চুক্তির ওপর সংসদে ভোট হবার কথা ছিল৷ কিন্তু চুক্তি নিয়ে এমপিদের অসন্তোষের মুখে ভোট পিছিয়ে দিতে বাধ্য হন তিনি৷
মে'র ওপর যাঁরা অনাস্থা এনেছেন, তাঁদের একজন সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী ওয়েন প্যাটারসন৷ তিনি বলেন, ‘‘চুক্তিটি এতই বাজে হয়েছে যে তা ইশতাহারে উল্লেখ করা প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক৷''
তবে অনেক রক্ষণশীল নেতাই মে'র পাশে দাঁড়িয়েছেন৷ যেমন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট মনে করেন, ‘‘নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা এখনই উচিত হয়নি৷'' তিনি মনে করেন, ব্রেক্সিট কার্যকর করার জন্য মে-ই সঠিক নেতৃত্ব৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদও তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন৷
লড়াইয়ে প্রস্তুত
১০ ডাউনিং স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে মে বলেন, তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানেব্রেক্সিটের চুক্তি নিয়ে দরকষাকষি জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে বিরোধীলেবার পার্টির হাতে চলে যাওয়া৷ এতে ব্রেক্সিট কার্যকর দেরি হতে পারে অথবা থেমে যেতে পারে৷
‘‘ভালো ও খারাপ দুই রকম সময়ের মধ্য দিয়েই গত দুই বছর অতিবাহিত হয়েছে৷ তবে আমি বিশ্বাস করেছি যে, এই চুক্তি সম্ভব৷আর এখন এটি একেবারেই হাতের মুঠোয়,'' বলেন মে৷
‘‘আমি কাজটি শেষ করতে প্রস্তুত,'' তিনি যোগ করেন৷
মে'র সামনে চ্যালেঞ্জ
আস্থা-অনাস্থার ভোটে অংশ নেবেন রক্ষণশীল ৩১৫ সংসদ সদস্য৷ ১৫৮ ভোট পেলেই মে জিতবেন৷ যদি তিনি জেতেন, আগামী এক বছর তাঁকে আর কোনো চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন না সংসদ সদস্যরা৷ কিন্তু যদি তিনি হেরে যান, তাহলে তাঁকে ইস্তফা দিতে হবে এবং আগামী নেতৃত্ব নির্বাচনের লড়াইয়ে অংশ নিতে পারবেন না তিনি৷ কনজারভেটিভ দলে তাঁর পরবর্তী নেতাই তখন হবেন প্রধানমন্ত্রী৷
এদিকে, মে'র ওপর অনাস্থা আনার জন্য বিরোধী শিবিরেও, বিশেষ করে সবুজ দল ও স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টিও জেরেমি করবিনের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছে৷ তাঁরা চাইছেন, পুরো সংসদ জুড়ে মে'র নেতৃত্বের প্রশ্ন নিয়ে ভোট হোক৷ তবে এখন পর্যন্ত তা ঠেকিয়ে রেখেছেন করবিন৷
জেডএ/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)