প্রতি বছর ২ কোটি টন খাবার নষ্ট করে জার্মানরা
৯ মে ২০১১আট কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষের দেশে ফি বছর যে পরিমাণ খাদ্য নষ্ট করা হচ্ছে, তা নিয়ে চিন্তা হওয়াটাই তো স্বাভাবিক, যেখানে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ অভুক্ত থাকেন দিনের পর দিন৷ এই অবস্থায় জার্মানির সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদদের বোধোদয় হয়েছে৷ তারা চাইছেন সচেতনতা সৃষ্টি করতে৷
জার্মানির বন শহরের একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে, নাম দ্য ক্যাসিয়াস গার্টেন৷ সন্ধ্যেবেলায় খাবারের এই দোকানটি বন্ধ হবার ঠিক ১৫ মিনিট আগে গিয়ে দেখা গেল এক অন্যরকম দৃশ্য৷ অন্তত ত্রিশজন মানুষ ভিতরে৷ তাদেরকে খাবারের প্যাকেট তুলে দিচ্ছেন কর্মীরা৷ মাত্র চার ইউরোর বিনিময়ে ক্রেতারা কিনছেন টাটকা স্যালাড এবং অন্যান্য খাবারের প্যাকেট৷ অন্য সময়ে এই খাবারের দাম প্রায় চারগুণ৷ দিনের শেষভাগে যে সব খাবার টাটকা এবং বিক্রি উপযোগী রয়েছে তা কম দামে কেন ছেড়ে দেয়া হচ্ছে?
রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক জানাচ্ছেন, এক সময় এই খাবার ফেলে দিতে হতো৷ ফলে প্রচুর ক্ষতি হতো আমাদের৷ দুই বছর আগে আমরা সিদ্ধান্ত নিই কম দামে এগুলো ছেড়ে দেওয়ার৷ এখন আমাদের লোকসান অনেক কমেছে৷ তবে এরপরেও প্রতি সপ্তাহে অন্তত সাড়ে তিনশ কেজি খাবার নষ্ট হচ্ছেই৷
বাড়তি খাবার উৎপাদন মানেই বাড়তি জ্বালানি খরচ৷ আর যদি সেই খাবার নষ্ট হয়, তাহলে পুরোটাই ক্ষতি৷ সামগ্রিকভাবে এই ক্ষতি পুরো পৃথিবীর৷ ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া খাবার নিয়ে তৈরি করা চলচ্চিত্রের পরিচালক ভালেন্টিন থ্রুন এমনটাই বলছেন৷ তাঁর কথায়, বাড়তি জ্বালানি উৎপাদন করে আদতে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনকেই উৎসাহিত করছি৷ এ অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন৷
তিনি জানাচ্ছেন, ফি বছর ২ কোটি টন খাবার নষ্ট হয় ইউরোপের এই দেশটিতে৷ যদিও তাঁর এই পরিসংখ্যান নিয়ে সরকারি ভাষ্য অজানা৷
জার্মান অ্যাসোসিয়েশন অফ ফুড রিটেলার্স এখন নষ্ট হওয়া এই খাবারের আর্থিক মূল্য নিরূপণে কাজ করছে৷ অন্যদিকে, জার্মান সরকার এবং বেসরকারি সংগঠনগুলো এই খাদ্য অপচয় রোধে বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক