প্যালেস্টাইনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের কিছু ছবি
১৯৬৭ সালের ছ’দিনের যুদ্ধে জয়ের পর, তথাকথিত ‘উইপিং ওয়াল’ বা ওয়েস্টার্ন ওয়ালের কাছে জড়ো হয়েছিল ইসরায়েলি সেনারা৷ ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেন ফটো সাংবাদিক ডেভিড রুবিংগার৷ দেখুন সদ্য প্রয়াত সেই ফটোগ্রাফারের কিছু বিখ্যাত ছবি৷
১৯৬৭ সাল: গাজা স্ট্রিপ
১৯২৪ সালে ভিয়েনায় জন্মগ্রহণ করেন ডেভিড রুবিংগার৷ কিন্তু নাৎসিদের হাত থেকে বাঁচতে প্যালেস্টাইনে পালিয়ে গিয়েছিলেন৷ নিজে বাঁচলেও, মা মারা যান হলোকস্টে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলন, সে সময়ই তাঁর মধ্যে ফটোগ্রাফির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়, পরবর্তীতে ফটোসাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ছ’দিনের সেই যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনারা কীভাবে মিশরের সেনা ও ফিলিস্তিনিদের আটক করছে৷
ওয়েস্টার্ন ওয়ালে একত্রিত প্যারাট্রুপাররা
ডেভিড রুবিংগারের সবচেয়ে বিখ্যাত কাজ এটি৷ এখানে ইসরায়েলি সেনাদের জেরুজালেমের তথাকথিত ‘উইপিং ওয়াল’ বা ওয়েস্টার্ন ওয়ালের ওপর দেখা যাচ্ছে৷ ১৯৬৭ সালের ছ’দিনের যুদ্ধে প্রথমবারের মতো পশ্চিম তীর এবং গাজা স্ট্রিপ দখল করতে সক্ষম হয় ইসরায়েল৷ রুবিংগার এই ছবিটি তোলেন যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে৷ ইসরায়েলি সরকার খুব কম দামে সকলের কাছে এই ছবিটি বিক্রি করে৷ ফলে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যায় ছবিটি৷
যুদ্ধের সময় আরিয়েল শারন
এই ছবিটি সাবেক ইসরায়েলি সেনা প্রধান আরিয়েল শারনকে (মাঝে) দেখা যাচ্ছে অন্যান্য সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে, ১৯৬৭ সালের ১ জুন ইসরায়েলের নেগেভ মরুভূমিতে৷ ছ’দিনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার দিন চারেক আগে তোলা এই ছবিটি৷ শারন পরবর্তীতে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন৷ ২০১৪ সালে মারা যান তিনি৷
দ্বন্দ্ব সংঘাতের ইতিহাসের প্রামাণ্যচিত্র
এ ছবিতে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তের দিকে চলেছে ইসরায়েলি সেনারা৷ ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে সিরিয়া যখন গোলান উপত্যকায় হামলা চালায়৷ রুবিংগার সেসময় জীবনের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে ১০টি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে গিয়ে ছবি তোলেন৷ ২০০৭ সালে নিজের বইটিতে তিনি লেখেন, ‘‘এই ছবিগুলোর দিকে তাকালে মনে হয়, আমি সত্যিই ভাগ্যবান ছিলাম৷ তাই বেঁচে ফিরতে পেরেছি৷’’ তাঁর বইটির নাম ‘ইসরায়েল থ্রু মাই লেন্স: একজন ফটোসাংবাদিক হিসেবে ৬০ বছর’৷
১৯৭৩ সালে ইয়ুম কিপুর যুদ্ধ
১৯৭৩ সালে ইয়ুম কিপুর যুদ্ধে সিরিয়ার সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ইসরায়েল৷ এ যুদ্ধ অক্টোবর যুদ্ধ নামেও পরিচিত৷ রুবিংগারের এই ছবিতে গোলান উপত্যকায় ইসরায়েলি ট্যাংকের বহর আর সিরীয় সেনাদের দেখা যাচ্ছে৷ ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতিও ফুটে উঠেছে ছবিতে৷ আশির দশকেও এ অঞ্চলে উচ্ছ্বসিত ইসরায়েলি সেনা আর বিষাদগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের ছবি তুলেছিলেন রুবিংগার৷
জাতি নিমার্ণের আলোকচিত্রী
ডেভিড রুবিংগার তাঁর জীবনের দীর্ঘ ৫০ বছর ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন৷ ইসরায়েলের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস ডেভিডকে রুবিংগারকে ‘একটি জাতি তৈরির আলোকচিত্রী’ হিসেবে গণ্য করেছিলেন৷