ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত রাশিয়া থেকে ছোড়া হয়নি: বাইডেন
১৬ নভেম্বর ২০২২হামলায় দুজন নিহত হয়েছেন৷
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে জি৭ ও ন্যাটোর নেতাদের সঙ্গে পোল্যান্ডে হামলার বিষয়ে কথা বলেন বাইডেন৷ এরপর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই হামলার তদন্তে পোল্যান্ডকে সহায়তা করতে একমত হয়েছি৷ আসলে কী ঘটেছে সেটা আমরা খুঁজে বের করবো.. এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে৷''
রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়েছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, ‘‘এটা অসম্ভাবনীয়... যে রাশিয়া থেকে এটা ছোড়া হয়েছে৷ তবে আমরা বিষয়টি দেখছি৷''
এদিকে, মার্কিন কর্মকর্তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধান বলছে, পোল্যান্ডে পড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি ইউক্রেনের বাহিনী ছুড়েছে৷ তারা আসলে এটি রাশিয়ার একটি ক্ষেপণাস্ত্রকে লক্ষ্য করে ছুড়েছিল৷
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ এই অভিযোগকে ‘উত্তেজনা বাড়ানোর উসকানি' বলে আখ্যায়িত করেছে তারা৷
পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পোলিশ গ্রাম প্রেৎসেভোডতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে৷ এটি রাশিয়ার তৈরি বলেও জানিয়েছে তারা৷
এদিকে পোল্যান্ডে এই হামলার পর ইউক্রেন যুদ্ধ প্রতিবেশী দেশগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আরও বেড়ে গেল৷ সে ক্ষেত্রে সামরিক জোট হিসেবে ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার সরাসরি সংঘাত ঘটতে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন৷
যদি কখনো প্রমাণিত হয় যে রাশিয়া পোল্যান্ড বা অন্য কোনো ন্যাটো দেশে হামলার জন্য দায়ী, সে ক্ষেত্রে ন্যাটোর সদস্য দেশ হিসেবে সে দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথ প্রতিরক্ষা নীতির ভিত্তিতে বাকিদের সহায়তা চাইতে পারে, যা ‘আর্টিকেল ফাইভ' নামে পরিচিত৷ সেই নীতি অনুযায়ী যে কোনো সদস্য দেশ আক্রান্ত হলে গোটা সামরিক জোট সে দেশের সামরিক সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাধ্য৷
১৯৪৯ সালে ন্যাটো প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সেই সুযোগ রাখা হয়েছে৷ এখনো পর্যন্ত ২০০১ সালে তথাকথিত নাইন ইলেভেন হামলার পর শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে৷ তবে সব সদস্যের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ‘আর্টিকেল ফাইভ' কার্যকর করা সম্ভব৷ গত সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, তার দেশ ন্যাটোর প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করতে প্রস্তুত৷
তবে চরম পদক্ষেপ নেবার আগে ঠান্ডা মাথায় গোটা বিষয়টি ভেবে দেখতে ন্যাটো সনদে ‘আর্টিকেল ফোর'-এর আওতায় এক প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা রাখা আছে৷ সেই ধারা অনুযায়ী কোনো সদস্য দেশ যদি নিজস্ব এলাকার অখণ্ডতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা বা নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করে, তখন বাকি সব সদস্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে৷ বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পোল্যান্ড সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে৷
জেডএইচ/কেএম (এএফপি, রয়টার্স, এপি)