1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পোপের ভাষণ বর্জন করবেন প্রায় ১০০ জার্মান সাংসদ

২১ সেপ্টেম্বর ২০১১

পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট দ্বিতীয় বারের মতো নিজের দেশ জার্মানিতে সরকারি সফরে আসছেন৷ কিন্তু এই সফরকে ঘিরে বিতর্কের শেষ নেই৷

https://p.dw.com/p/12dZE
পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টছবি: AP

বৃহস্পতিবার জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগ'এ তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা৷ কিন্তু বাধ সেধেছেন প্রায় ১০০ সাংসদ৷ মোটামুটি ধর্মনিরপেক্ষ জার্মানির সংসদে তাঁরা কোনো ধর্মীয় নেতাকে দেখতে চান না৷ তারা নিজেদের রাজনৈতিক দলের নির্দেশ মেনে এমন অবস্থান নেন নি – ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ভিত্তিতেই এদিন সংসদ বর্জন করতে চান তাঁরা৷ তাদের মধ্যে বাম দলের সদস্যদেরই পাল্লা ভারি৷ আরও রয়েছেন বিরোধী সামাজিক গণতন্ত্রী ও সবুজ দলের সদস্যরা৷

বলাই বাহুল্য, এত জন সাংসদের এই ছোটখাটো ‘বিপ্লব' জার্মানির রাজনৈতিক মহলের জন্য মোটেই স্বস্তিকর নয়৷ বিশেষ করে রক্ষণশীল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী শিবিরের নেতারা সাংসদদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন৷ যেমন বাভেরিয়ার রক্ষণশীল সিএসইউ দল বলেছেন, জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ সংসদের পক্ষ থেকে ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট'কে ভাষণ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন৷ সেই সংসদেরই সদস্য হিসেবে এমন এক অনুষ্ঠান বর্জন করলে তা দেশের সর্বোচ্চ পদের প্রতি অসম্মান জানানো হয়৷ এক নেতা বলেছেন, রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুটিন বা মার্কিন নেতা জর্জ ডাব্লু বুশ'এর মতো বিতর্কিত ব্যক্তিত্বও জার্মান সংসদে ভাষণ দিয়েছেন৷ তাদের সব সিদ্ধান্ত বা মতের প্রতি সমর্থন না থাকা সত্ত্বেও সাংসদরা শিষ্টাচার দেখিয়ে তাদের বক্তব্য শুনেছেন৷ পোপের সঙ্গেও সব বিষয়ে মতের মিল থাকতে হবে, তার কোনো মানে নেই৷ পোল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাদেউশ মাসোভিয়েৎস্কি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, পোপ তো জাতিসংঘেও ভাষণ দেন৷ তাহলে বুন্ডেসটাগ'এ তাঁর ভাষণ নিয়ে এত হইচই করার কী কারণ থাকতে পারে?

বিদ্রোহী সাংসদরা অবশ্য এখনো নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন৷ তাদের সাফ কথা৷ ধর্মের প্রশ্নে রাষ্ট্রের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা উচিত৷ তাছাড়া প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্যাথলিক ধর্ম যৌনতা, নারী অধিকারের মতো আধুনিক সমাজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে এখনো প্রগতিশীল অবস্থান নিতে রাজি হচ্ছে না৷ সবুজ দলের এক নেতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘এর আগে তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামারও বুন্ডেসটাগে ভাষণ দেওয়ার কথা হয়েছিল৷ কিন্তু তখন অনেকে বলেছিলেন, কোনো ধর্মগুরুকে জার্মান সংসদে আনা ঠিক হবে না৷ এবার ক্যাথলিক ধর্মের প্রধান পোপের ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই সেই নিয়ম ভাঙছি৷ পরের বার কি দলাই লামার ক্ষেত্রে আমরা আবার বলতে পারবো যে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না''

ক্যাথলিক ধর্মে চরম রক্ষণশীলতার অনেক বিষয় নিয়ে জার্মানিতে ক্ষোভ রয়েছে৷ যেমন বিবাহ বিচ্ছেদ ও নতুন করে আবার বিয়ে করলে গির্জা ক্যাথলিকদের সমান মর্যাদা দেয় না৷ প্রোটেস্ট্যান্ট ও অন্যান্য সম্প্রদায় সম্পর্কেও ক্যাথলিক ধর্মের অবস্থান গোঁড়ামির পর্যায়ে পড়ে বলে অনেকে সমালোচনা করেন৷ খোদ জার্মান প্রেসিডেন্ট ভুল্ফ এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে এই সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন৷ তবে তিনি সংলাপের পথ বন্ধ করতে চান না৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক