পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে হবে মহাকাশচারীদের
২৬ জুলাই ২০১০মহাকাশচারীদের জন্য খাদ্য হিসেবে পোকার ব্যবস্থা করলে কেমন হয়? চীন মঙ্গলগ্রহে মহাকাশযান পাঠাবে কবে? গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের সৃষ্টির রহস্য কী? ১৮ থেকে ২৫শে জুলাই জার্মানির ব্রেমেন শহরে প্রায় ৭০টি দেশের ৪,০০০-এরও বেশি বিজ্ঞানী এমন অনেক বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করলেন৷ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক নাম ‘সিওএসপিএআর অ্যাসেমব্লি'৷ ব্রেমেনে ৩৮তম এই সম্মেলনে অংশ নেন বাংলাদেশের মহাকাশ বিজ্ঞানী তানভির ফারুক, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ সাইনটিস্ট হিসেবে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা ‘নাসা'র সঙ্গে একটি প্রকল্পে কাজ করছেন৷ তাঁর কাজ পৃথিবীর বুকে বসে মাধ্যাকর্ষণ-বিহীন পরিবেশ তৈরি করার কঠিন কাজ নিয়ে৷ অথচ দূরপাল্লার মহাকাশ অভিযানে মানুষ পাঠাতে হলে এই পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা জরুরি৷
ব্রেমেনের সম্মেলনে যে বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে, সেটা হলো দূরপাল্লার মহাকাশ অভিযানে মানুষের খাদ্যের সংস্থান৷ সব খাদ্য পৃথিবী থেকে বহন করে নিয়ে গেলে মহাকাশযানের ওজন ও আয়তন বাড়াতে হবে৷ জাপানের বিজ্ঞানীরা মহাকাশচারীদের জন্য পোকা-মাকড় থেকে খাদ্য তৈরি করেছেন৷ তাঁদের দাবি, এই খাদ্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু৷ তবে শুধু পোকামাকড় নয়, সেই খাদ্যের উপাদান হিসেবে বাদামী চালের ভাত ও সোয়া বিনও থাকছে৷ মহাকাশযানের ভিতরে অথবা চাঁদের বুকে এই খাদ্যের উপাদানগুলি উৎপাদন করা যাবে বলে জাপানি বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন৷ ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সেই খাবার খেয়ে নাকি ঢালাও সার্টিফিকেট দিয়েছেন৷
বিশাল এই সম্মেলনের বিষয়-বৈচিত্র্য ছিলো লক্ষ্য করার মতো৷ চীনের প্রস্তাবিত মঙ্গলগ্রহ অভিযান সবার নজর কেড়েছে৷ গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা হয়েছে৷ মোটকথা, একই জায়গায় মহাকাশবিজ্ঞানের সব ক্ষেত্র সম্পর্কে তথ্যের আদান-প্রদান করার এই অসাধারণ সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন অংশগ্রহণকারীরা৷
শুধু ভাবনার আদান-প্রদান নয়, মহাকাশ বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত অনেক প্রতিষ্ঠান উপযুক্ত বিজ্ঞানী, গবেষক বা কর্মী নিয়োগের সুযোগও পেয়েছিল এমন এক সম্মেলনে৷ সরাসরি চাকরির বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি সম্মেলনের খোলামেলা পরিবেশে আলাপ-পরিচয়ের যে সুযোগ ছিল, তার ফলে তৈরি হয়েছে এমন অনেক সম্ভাবনা৷ উপকৃত হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সম্ভাব্য কর্মীরা৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক