পোশাক শ্রমিকদের পাশে মোবাইল অ্যাপ
৮ অক্টোবর ২০১৬যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি দু'টি মোবাইল সেবায় বিনা খরচে নিজের পরিচয় গোপন রেখে পোশাক শ্রমিকরা তাদের প্রতি বা তাদের আশেপাশের কারো প্রতি কোনো অবিচার করা হলে তা উপযুক্ত জায়গায় জানানোর সুযোগ পাচ্ছেন৷ বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পোশাক প্রস্তুত করা স্থানীয় কারখানাগুলো যাতে শ্রমিকদের বেআইনিভাবে কাজে লাগাতে না পারে বা আধুনিক দাসত্বের শিকার যাতে কেউ না হয়, সেজন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এটি ব্যবহার করে বড় পোশাক নির্মাতাদের আগেভাগে সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে৷
নিউইয়র্কভিত্তিক স্টার্ন স্কুল অফ বিজনেসের সারাহ লেবোভিৎস এই প্রসঙ্গে জানান, যারা পোশাক তৈরি করেন, তাদের সঙ্গে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থানগত দূরত্ব অনেক৷ এই দূরত্ব মিটিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগাযোগের উপায় বের করা এক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল৷ প্রযুক্তি এক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে বলে জানান তিনি৷
পোশাক শ্রমিকদের জন্য তৈরি দুই ব্যবস্থা, লেবারলিংক এবং লেবারভয়েসেস, প্রায় একইরকমভাবে কাজ করে৷ শ্রমিকরা এই ব্যবস্থায় ফোন করে খুব সহজে ১ চেপে ‘হ্যাঁ' বা ২ চেপে ‘না' বলে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন৷ তাদের কাছে জানতে চাওয়া প্রশ্নগুলো অনেকটা এরকম হয়: আপনার সঙ্গে কি ন্যায্য ব্যবহার করা হচ্ছে? সময়মতো বেতন দেয়া হচ্ছে? ‘ফায়ার এক্সটি' কি লক করে রাখা হয়েছে? আপনি কি কোনো শিশু শ্রমিক দেখেছেন?
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ হাজারেরও বেশি শ্রমিকের লেবারভয়েসেসে করা ফোন যাচাই করে দেখা গেছে প্রতি পাঁচটি কারখানার একটিতে শিশু শ্রমের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে, জানান সেবাটির পরিচালক আয়ুশ খান্না৷
তিনি বলেন, ‘‘উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মোবাইল ব্যবহারের হার এখন নব্বই শতাংশের বেশি৷ ফলে সাপ্লাই চেইনের মধ্যে স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা বাড়াতে এই প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই স্বাভাবিক৷''
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানির হিসেবে বিশ্বের মধ্যে চীনের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান৷ আর বাংলাদেশের আশি শতাংশের বেশি রপ্তানি আয়ের উৎস পোশাক খাত যেখানে চল্লিশ লাখের মতো মানুষ কাজ করে৷ তবে বাংলাদেশের শ্রমিকদের মাসিক আয় ৬৮ মার্কিন ডলারের মতো যেখানে চীনে একজন শ্রমিকের গড় আয় ২৮০ মার্কিন ডলার৷
এআই/এসিবি (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)