1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজসেনেগাল

পেট চালাতে সেনেগালের মৎস্যজীবীরা স্পেনে

২২ মার্চ ২০২৪

সেনেগালের সাগরে চাইলেও মাছ ধরতে পারছেন না স্থানীয় মৎস্যজীবীরা৷ সাগর পেরিয়ে তারা পাড়ি দিচ্ছেন স্পেনে৷ সেখানেও জীবন অনিশ্চিত৷

https://p.dw.com/p/4e229
মাছ ধরছেন সেনেগালের এক জেলে
এনভায়রনমেন্টাল জাস্টিস ফাউন্ডেশন (ইজেএফ)-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে অবাণিজ্যিক বা পরিবারভিত্তিক জেলেরা ৫৮ ভাগ মাছ ধরছেনছবি: NACHO DOCE/REUTERS

সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সালকেই দেশে পর্যাপ্ত মাছ না থাকার জন্য দায়ী করছেন মৎস্যজীবী খলিফা এনদৌর৷ বাধ্য হয়ে উত্তরপূর্ব স্পেনে কৃষি খাতে সহকারির কাজ খুঁজছেন তিনি৷

সেনেগালে তার অপেক্ষায় স্ত্রী, মারিয়াতো এমবোদজে৷ রাজধানী ডাকারের দক্ষিণের শহর বারগনিতে থাকেন তিনি ও তাদের তিন সন্তান৷ মাছ প্রক্রিয়াকরণের কাজ জানা এই নারীও কাজ পাচ্ছেন না৷ দিন রাত স্বামীর কাজের অনুমতি পাবার খবর শোনার আশায় থাকেন মারিয়াতো৷

খলিফার মতো আফ্রিকার হাজারো সাবেক মৎস্যজীবীরা ছোট পালতোলা নৌকা বা ডিঙিতে চেপে বিপজ্জনক যাত্রায় পাড়ি দেন, কারণ পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন এলাকায় নজরে পড়ছে মাছের অভাব৷

খলিফার মতো বহু মানুষেরই অভিযোগ সরকারের দিকে, কারণ দেশের পানিতে মাছ চাষের অনুমতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বা চীনের মতো শক্তির হাতে তুলে দিয়েছে সরকার৷ রোববার সেনেগালে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে নির্বাচন৷ সেখানেও বড় ইস্যু হয়ে সামনে আসছে মাছের অভাবের দিকটি৷

এনদৌরের মতে, ‘‘সেনেগালের সাগর মরে গেছে৷ কারণ ম্যাকি সাল সব পানিই বেচে দিয়েছে৷''

ম্যাকি সাল ২০১২ সাল থেকে সেনেগালকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন৷ তার সরকারের মৎস্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের তরফে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷ এই ম্যাকি সালের নেতৃত্বেই ইইউ'র সাথে একটি চুক্তি করে সেনেগাল৷ দশ হাজার টন টুনা মাছ চাষ করার জন্য ২০১৪ সাল থেকে ইইউ সেনেগালকে ১৭ লাখ ইউরো দিয়েছে৷ এছাড়া, জাহাজের মালিকদেরও বছরে ১৩ লাখ ৫০ হাজার ইউরো দিতে হয় বলে জানাচ্ছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন৷

বেসরকারী সংস্থাদের মতে, বিদেশি ট্রলারগুলিই এই অঞ্চলে মাছ কমে যাবার পেছনে রয়েছে৷ এনভায়রনমেন্টাল জাস্টিস ফাউন্ডেশন (ইজেএফ) ২০২৩ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায়, ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে অবাণিজ্যিক বা পরিবারভিত্তিক মৎস্যজীবীদের ধরা মাছের পরিমাণ ৫৮ শতাংশ কমেছে৷

সেনেগাল থেকে ইউরোপের পথে দুঃসহ যাত্রা

যে সাগরে নেই কাজ

পাঁচ বছর আগের তুলনায় বর্তমানে মৎস্যজীবীরা তাদের পরিবারের ভরনপোষণ ঠিকমতো করতে পারছেন না, বলে জানান ইজেএফকে সাক্ষাৎকার দেওয়া মৎস্যজীবীদের ৭৮ শতাংশ৷

২০ বছর বয়সি এনগোম এনদৌরের সাথে রওয়ানা দিয়ে এসে পৌঁছায় কাটালুনিয়ার গুইসোনা শহরে৷ একটি বাজারে হাঁটতে হাঁটতে তিনি বলেন, ‘‘আগের মতো ১০০ শতাংশ কর্মক্ষম নেই এই সাগর৷ তাই আমরা নৌকা করে এখানে এসেছি৷''

রোববারের নির্বাচনে লড়ছেন আনতা বাবাকার৷ জয়ী হলে ইইউর সাথে করা চুক্তিকে পুনর্বিবেচনা করবেন বলে জানান তিনি৷ সেনেগালিজ প্রেস এজেন্সিকে তিনি বলেন যে এই চুক্তির কারণেই সেনেগালের তরুণরা মাছের অভাবে নৌকায় চেপে ইউরোপের দিকে রওয়ানা দিচ্ছেন৷

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ক্যানারি দ্বীপে এসে পৌঁছায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষ, ৩৯ হাজার ৯১০জন৷ এই সংখ্যা আরো বাড়ছে বলে জানায় তারা৷ অভিবাসী অধিকার সংস্থা ওয়াকিং বর্ডার্সের মতে, এই পথে আসতে গিয়ে গত বছর ছয় হাজার সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন৷

ক্যানির দ্বীপে পৌঁছে এনদৌর ও এনগোম গুইসোনার দিকে যান৷ যদিও মৎস্যজীবীর কাজই তাদের প্রথম পছন্দ, কিন্তু সেই কাজের অভাবে কৃষিকাজে সহকারীর কাজে তাদের আপত্তি নেই৷ বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি পেতে তাদের তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে৷

এনগোমের দাদা সুলেমানে ফায়েও একজন সাবেক মৎস্যজীবী৷ তার নাতি সেনেগাল ছাড়ায় তিনি খুশি, কালন পরিবার চালানোর আর কোনো উপায় ছিল না৷ সমুদ্রতটে দাঁড়িয়ে দূর থেকে আসা মৎস্যজীবীদের দেখেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘এই যে দেখুন, তারা মাছ ধরে এসেছে৷ বাক্সগুলি দেখুন, একদম খালি, কিছুই নেই৷''

এসএস/এসিবি (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান