পেগিডার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাড়ছে
২৭ ডিসেম্বর ২০১৪শিল্প-বাণিজ্যের নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে রাজনীতিক মহল এবং – সবচেয়ে বড় কথা – সাধারণ জার্মানরা পেগিডা-র অভিবাসন বিরোধী মনোভাবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যাবৎ এ দেশে যে মূল্যবোধ গড়ে উঠেছে, এবং বিদেশে এ দেশের যে ভাবমূর্তি সৃষ্টি হয়েছে, পেগিডা-র মতো আন্দোলন তাকে বিপন্ন করছে, বলে পেগিডা-বিরোধীদের বক্তব্য৷
পাল্টা ব়্যালি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলন চালিয়ে এই জার্মানরা জানান দিচ্ছেন যে, পেগিডা-ই জার্মানির প্রতিভূ নয়৷ পেগিডা বা ‘‘প্রতীচ্যের ইসলামিকরণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী ইউরোপীয়বর্গ'' বিগত দশ সপ্তাহ ধরে ড্রেসডেনে তাদের মিছিল ও জনসভা করে আসছে৷ জার্মানির রাজনীতিক মহল তথা প্রধান দু'টি গির্জার কর্মকর্তারা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ যেমন ক্যাথলিক, তেমনই প্রটেস্টান্ট গির্জার প্রধান ও বিশপবর্গের বক্তব্য হলো: যিশুখ্রিষ্ট স্বয়ং উদ্বাস্তুর সন্তান ছিলেন, কাজেই শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়াটা একটি খ্রিষ্টান কর্তব্য৷
অপরদিকে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল থেকে শুরু করে অপরাপর রাজনীতিকরা প্রধানত বিদেশে জার্মানির ভাবমূর্তি মলিন হতে পারে, এমন আশঙ্কা দেখছেন৷ প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক জাতির প্রতি তাঁর বড়দিনের ভাষণে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি বিশেষ সহানুভূতির ডাক দিয়েছেন৷ এমনকি ম্যার্কেল মন্ত্রীসভার প্রবীণ অর্থমন্ত্রী ভোলফগাং শয়েবলে, যিনি পেগিডা-র বক্তব্য অন্তত শুনে দেখার সপক্ষে, তিনিও বলেছেন: ‘‘আমাদের সমৃদ্ধির কথা ভাবলে, আমরা কী ধরনের জাতি হব, যদি আমরা উদ্বাস্তুদের প্রত্যাখ্যান করি?''
তবে পেগিডা-র বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন জার্মান শিল্প সমিতির সভাপতি উলরিশ গ্রিলো৷ ডিপিএ সংবাদ সংস্থার সাক্ষাতকারে গ্রিলো বলেছেন, ইউরোপের সেরা অর্থনীতি হিসেবে জার্মানিকে প্রতিযোগিতার উপযোগী থাকতে হলে, তার অভিবাসীদের প্রয়োজন পড়বে৷ জার্মানির জনসংখ্যাগত বিকাশধারার পরিপ্রেক্ষিতে অভিবাসন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে, বলেন গ্রিলো৷
ফেসবুক ও টুইটারে পেগিডা-র বিরুদ্ধে ঝড় বয়ে গেছে৷ বার্লিনে ছাত্র-ছাত্রীরা একটি ওয়েবসাইট শুরু করেছেন, যেখানে তাঁরা উদ্বাস্তুদের সঙ্গে তাঁদের ফ্ল্যাট শেয়ার করার প্রস্তাব দিচ্ছেন৷
এসি/ডিজি (এএফপি, এপি)