পৃথিবীর পথে পথে
ফার্দিনান্দ মাগেলারের জলপথে বিশ্ব প্রদক্ষিণের ৫০০ বছর পূর্ণ হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে৷ ১৫১৯ সালে তাঁর সেই অভিযানের পর মানুষ নানান উপায়ে বিশ্ব প্রদক্ষিণের চেষ্টা করেছে, কেউ কেউ পায়ে হেঁটেও করতে চেয়েছেন কাজটি৷
একজন মরণোত্তর নায়ক
ক্যাপ্টেন ফার্দিনান্দ মাগেলান ১৫১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ‘স্প্যানিশ মুকুট’ নামে স্প্যানিশ বন্দর সানলকার থেকে ভিক্টোরিয়া জাহাজ নিয়ে দুই বছর ১১ মাস দুই সপ্তাহ ধরে যাত্রা করেছিলেন৷ ১৫২২ সালে ফিরে আসার জন্য মাগেলান এবং তাঁর ২৪৪ জন নাবিকের মধ্যে বেশিরভাগই টিকে থাকতে না পারলেও এই পরিভ্রমণের জন্য পথিকৃৎ হয়ে আছেন৷
কালযুগের আবিস্কার
মাগেলানের মিশন: দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপের আশপাশের বিপজ্জনক সমুদ্রপথের বিকল্প হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার স্পাইস দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিমে একটি পথ সন্ধান করেন মাগেলান৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে তিনি একটি প্রণালী আবিষ্কার করেছিলেন, যা ছিল আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগর যাওয়ার পথ, জাহাজগুলো এখনো সেই পথে চলে৷
৮০ দিনে বিশ্ব পরিভ্রমণ
ফরাসি লেখক জুল ভার্ন তাঁর ৮০ দিনে বিশ্ব পরিভ্রমণ উপন্যাসে অদ্ভুত স্বভাবের ফিলিয়াস ফোগকে বিশ্ব প্রদক্ষিণের প্রতিযোগিতায় পাঠান৷ এখন পালতোলা নৌকায় করে পৃথিবী পরিভ্রমনের প্রতিযোগিতায় জিতে পাওয়া যায় জুল ভার্ন ট্রফি৷
সবথেকে কঠিন প্রতিযোগিতা
বিশ্বের সেরা নাবিকরা ১৯৮৯ সাল থেকে অনিচ্ছাকৃত নন-স্টপ ইয়ট রেসে অংশ নিচ্ছেন৷ প্রতি চার বছর পর পর এটি ফ্রান্সের আটলান্টিক উপকূলে লেস সাবেল-ডি'অলোনে শুরু ও শেষ হয়৷ এর রুট দক্ষিণ মহাসাগরের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ এই প্রতিযোগিতায় জয়ীরা নিজেকে নায়ক ভেবে উদযাপন করেন৷ এখন পর্যন্ত কোনো নারী এই প্রতিযোগিতায় জয়ী হননি৷
বিশ্বের দ্রুততম নারী
ব্রিটিশ নাবিক এলেন ম্যাকআর্থার ‘ভেন্ডি গ্লোবে’ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন, যদিও তিনি আশা করেছিলেন অন্য সবার চেয়ে কম সময়ে এটা করবেন৷ ২০০৪ সালের ২৮ নভেম্বর তিনি তাঁর ২২ দশমিক নয় মিটার ট্রাইমারান বিএন্ডকিউতে যাত্রা করেন এবং ৭১ দিন ১৪ ঘণ্টা ৪৩ সেকেন্ডে একাকী নৌকাযোগে বিশ্ব প্রদক্ষিণ করে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন৷ তিনি তিন বছর বিশ্বের দ্রুততম ইয়ট নারীর অবস্থান ধরে রাখেন৷
সৌরচালিত নৌকায় বিশ্ব পরিভ্রমণ
নৌকায় করে বিশ্ব পরিভ্রমণ করতে গিয়ে এমন কিছু মানুষ একত্রিত হয়েছিলেন, যারা সীমাবদ্ধতাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে চেয়েছেন৷ ‘তারানর প্ল্যানেটসোলার’ নৌকাটি হলো সুইস, জার্মান ও নিউজিল্যান্ডের যৌথ সহযোগিতার ফল৷ ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে পুরো সৌরশক্তিচালিত এই নৌকাটি ৫৮৫ দিনে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে বন্দরে ফিরে আসে৷ এর ছাদ ৩৮ হাজার ফটোভোলটাইক সেল নিয়ে গঠিত৷
সৌরশক্তি নিয়ে আকাশে
সুইস মনোবিজ্ঞানী ও বেলুনারোহী বার্ট্রান্ড পিকার্ড সৌরশক্তিচালিত বিমান নিয়ে আসেন, যাতে করে তিনি ২০১৫ সালের মার্চে পরিভ্রমণ শুরু করেন এবং এটি ২০১৬ সালের জুলাইয়ে আবুধাবিতে গিয়ে শেষ হয়৷