পুলিশের গুলিতে নিহত
১৮ আগস্ট ২০১২মারিকানায় অবস্থিত প্ল্যাটিনাম খনিটি পরিচালনা করে লোনমিন পিএলসি৷ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম প্ল্যাটিনাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এটি৷ প্ল্যাটিনাম খনির শ্রমিকরা মূলত বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে গত সপ্তাহের শুক্রবার থেকে ধর্মঘট শুরু করে৷ গত বৃহস্পতিবার পুলিশ ধর্মঘটরত শ্রমিকদের উপর গুলিবর্ষণ করলে প্রাণ হারায় ৩৪ ব্যক্তি৷ পুলিশের দাবি, আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালিয়েছে তারা৷ কেননা, আন্দোলনকারী শ্রমিকরা আগ্নেয়াস্ত্র, দা এবং গদা নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়৷
কিন্তু স্থানীয় গণমাধ্যম পুলিশের এই অভিযানকে আখ্যা দিচ্ছে ‘মারিকানা গণহত্যা' হিসেবে৷ সেদেশের সাধারণ মানুষও পুলিশের এই আত্মরক্ষায় গুলি চালানোর ব্যাখ্যা মেনে নিতে পারছে না৷ বরং অনেকে এই ঘটনাকে তুলনা করছে সেদেশ বর্ণবৈষম্য চলাকালীন নৃশংসতার সঙ্গে৷ সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, ১৯৬০ সালে সংগঠিত ‘সাপভিল গণহত্যা'-র সঙ্গে৷ সেসময় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ ৬৯ কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিবাদকারীকে হত্যা করে৷
মারিকানার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সেদেশের প্রেসিডেন্ট জুমা বিদেশ সফর সংক্ষিপ্ত করে খনি পরিদর্শনে যান৷ এসময় এই হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি৷ জুমা বলেন, ‘‘এটা পরিষ্কার যে, এই ঘটনার পেছনে ভয়ানক কোন ব্যাপার রয়েছে এবং একারণেই বিষয়টির তদন্তে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি আমি৷ আমাদেরকে অবশ্যই সত্য জানতে হবে৷''
এদিকে, হোয়াইট হাউস শুক্রবার জানিয়েছে, খনি শ্রমিকদের নিহতের ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘‘বিষন্ন'' হয়েছে৷ তবে এই ঘটনায় সরকারি তদন্তের বিষয়ে আশাবাদী সেদেশ৷ হোয়াইট হাউস মুখপাত্র জোস এয়ারনেস্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এই বিয়োগান্ত প্রাণহানিতে অ্যামেরিকার জনগণ বিষন্ন হয়েছে৷ তবে আমরা আশাবাদী যে, দক্ষিণ আফ্রিকা এই ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করবে এবং বরাবরের মতোই আমরা এই পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে সকল পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে উৎসাহ প্রদান করছি৷''
দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ প্রধান রিয়া পিয়েগা অবশ্য তাঁর বাহিনীর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, ‘‘সমঝোতা এবং আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরই শুধুমাত্র পুলিশ গুলিবর্ষণ করেছে৷'' এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় ২৫৯ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এছাড়া প্রাণহানির সংখ্যা ৩৪৷ আহত হয়েছে ৭৮ ব্যক্তি, জানান পুলিশ প্রধান৷
এআই / জেডএইচ (এএফপি)