পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর মামলায় পুনর্বিচারের নির্দেশ আদালতের
৮ জানুয়ারি ২০১০আফ্রিকার সিয়েরা লিওনের আশ্রয়প্রার্থী উরি জালো'কে ২০০৭'এর ৭ জানুয়ারি খুব ভোরবেলা ডেসাউ শহরের রাস্তায় মাতাল অবস্থায় পাকড়াও করা হয়৷ দুই মেয়ে অভিযোগ করে, জালো তাদের বিরক্ত করেছিলেন৷
পুলিশের ভাষ্য, আটক হবার সময় তিনি প্রবলভাবে বাধা দেন৷ তাঁকে ধরে পুলিশ স্টেশনের একটি সেলে বিছানায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় রাখা হয়৷ সেই অবস্থাতেই আগুনে পুড়ে মারা যান ২৩ বছর বয়সি জালো৷ কীভাবে, সেই প্রশ্নটাই বারবার উঠেছে এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে৷ কিন্তু তার কোন সুনির্দিষ্ট সদুত্তর মেলে নি৷
মামলা হয়েছে পুবের স্যাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যের আদালতে৷ সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার বক্তব্য রাখেন৷ বিশেষজ্ঞের মতামত নেয়া হয়৷ দেখা যায়, আগুন লাগার পর যথারীতি স্মোক অ্যালার্ম বেজেছিল৷ কিন্তু তা শুনে কেউ সেলে আসে নি৷ পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের ধারণা জালো নিজেই লাইটার জ্বালিয়ে আগুন লাগান৷
২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজ্য আদালত মামলাধীন পুলিশ অফিসারকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করেন৷ এই রায় সে সময় ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করে৷ বিভিন্ন মানবাধিকার গ্রুপ সমালোচনায় সোচ্চার হয়৷ জালোর পরিবারের পক্ষে দাঁড়ানো উকিল তাঁর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে চলা মামলায় ‘‘নৈ:শব্দের এক প্রাচীর'' সম্পর্কে অভিযোগ তোলেন৷ এবার জার্মানির ফেডারেল আপিল আদালত সেই রায় নাকচ করে দিয়ে এই মামলা সম্পূর্ণ নতুন করে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ এই রায়কে জার্মানির বার্তা মহলে স্বাগত জানানো হয়েছে৷
আপিল আদালত যুক্তি দেখিয়েছেন, সেলের বিছানার গদিতে আগুন ধরার সঙ্গে সঙ্গেই স্মোক অ্যালার্ম বেজে উঠেছে৷ গোটা গদিতে আগুন ছড়িয়ে গিয়ে ১২০ সেকেন্ডেরও কম সময়ে জালো পুড়ে মরার কয়েক মিনিট আগে অ্যালার্ম বাজার কথা৷ অভিযুক্ত পুলিশ যদি অ্যালার্ম শোনার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় উদ্ধার তৎপরতা চালাতেন তাহলে হয়ত এই মৃত্যু ঠেকানো যেতে পারতো৷ কিন্তু এই বিষয়টি রাজ্য আদালত বিবেচনায় আনে নি, বলা হয়েছে আদালতের এক বিবৃতিতে৷
মামলার কার্য বিধির একাধিক ফাঁক ফোকরের কথা বলেছে আপিল আদালত৷ এবং মামলাটি পুনর্বিচারের জন্য আর একটি আঞ্চলিক আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ মৃতের ভাই ডিয়াল্লো জালো জানতে চান পূর্ণ সত্যটা৷ তার জন্যই চলবে তাঁর ও পরিবারের অন্যদের প্রতীক্ষা৷
প্রতিবেদক: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার