পারমাণবিক পরীক্ষা চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া: জাতিসংঘ
৪ আগস্ট ২০১৮জাতিসংঘের দেয়া একাধিক শর্ত ভঙ্গ করেছে উত্তর কোরিয়া৷ শুক্রবার জাতিসংঘের ১৪৯ পৃষ্ঠার এক গোপন প্রতিবেদনে বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্র ও মিসাইল প্রোগ্রামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারাও এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলো৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জাতিসংঘের অন্যান্য দেশকে উত্তর কোরিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে৷
প্রতিবেদন যা আছে
- উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ও মিসাইল প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাচ্ছে৷ এছাড়া, সিকিউরিটি কাউন্সিলের ঘোষণা অমান্য করে অবৈধভাবে সমুদ্রে জাহাজ থেকে জাহাজে পেট্রোলিয়াম দ্রব্য এবং কয়লা সরবরাহ করা হচ্ছে৷
- যুক্তরাষ্ট্র বলছে ২০১৮ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ৫ লাখ ব্যারেলেরও বেশি পেট্রোলিয়াম পণ্য কিনেছে৷ ৪০টি জাহাজে ১২০টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এসব পণ্য কেনা হয়েছে৷
- বিক্রি করায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঠিকই এসব পণ্য থেকে অর্থ উপার্জন করে চলেছে উত্তর কোরিয়া৷ যেমন, ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত চীন, ভারত এবং অন্যান্য দেশে লোহা ও ইস্পাত সরবরাহ করে ১৪ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে দেশটি৷
- টেক্সটাইল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞাও অমান্য করেছে দেশটি৷ এক বছরে চীন, ঘানা, ভারত, মেক্সিকো, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, তুরস্ক এবং উরুগুয়ের কাছে ১০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি হয়েছে৷
- লিবিয়া, ইয়েমেন ও সুদানে ছোট ও হালকা অস্ত্র এবং অন্যান্য সামরিক যন্ত্র বিদেশি মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে সরবরাহ করেছে উত্তর কোরিয়া৷
- প্রতিবেদন হুসেইন আল-আলী নামের এক সিরিয়ান অস্ত্র চোরাচালানকারীর নাম উল্লেখ করে হয়েছে৷ বলা হয়েছে উত্তর কোরিয়ায় উৎপাদিত ব্যালিস্টিক মিসাইলও লিবিয়া ও ইয়েমেনে পাঠাতে ভূমিকা রেখেছেন হুসেইন৷
পালটাপালটি হুঁশিয়ারি
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও রাশিয়া, চীন ও অন্যান্য দেশকে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অবরোধ ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ার দিয়েছেন৷
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পম্পেও সিঙ্গাপুরে আসিয়ান সম্মেলন চলাকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এসব অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেবে, এবং আমরা এ বিষয় নিয়ে মস্কোর সঙ্গে কথা বলবো৷''
সিঙ্গাপুরে একই সম্মেলনে কথা বলেছেন উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং হো৷ যুক্তরাষ্ট্রকে একের পর এক অবরোধের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনা করেন৷ উত্তর কোরিয়া ভালো কাজ করলেও যুক্তরাষ্ট্র তার কোনো দাম দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷
তিনিও পালটা হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘যতক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উদ্বেগ দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, আমরাও একভাবে সামনে এগোবো না৷''
এডিকে/ডিজি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)