পানিযুদ্ধের সম্মুখে ভারত-পাকিস্তান!
২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দুই দেশের মধ্যে অচিরেই পানি নিয়ে বিবাদ হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা৷ তাদের দাবি আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে চলমান সহিংসতার কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে৷ এর মধ্যে ইয়েমেন, সোমালিয়া, সিরিয়া অন্যতম৷ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের জলবায়ু পরিবর্তনের ছায়া এশিয়াতেও প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে৷ যার প্রধান শিকার হতে যাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান৷ আশঙ্কার বিষয় এই যে, এই দুই দেশেরই পারমাণবিক সক্ষমতা রয়েছে৷
পাশাপাশি অবস্থানরত এই দুই দেশের মধ্যে নদী ও সীমানা বণ্টন নিয়ে সংকট চলমান৷ ভবিষ্যতেই সেটিই সম্মুখযুদ্ধে পরিণত হতে পারে পানির জন্য৷ ১৯৬০ সাল থেকে ভারত-পাকিস্তান সিন্ধু পানি চুক্তি মেনে আসছে৷ এই সিন্ধু নদ কাশ্মীর হয়ে ভারত থেকে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে৷ এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারত হয়ে হিমালয় থেকে পাকিস্তানে প্রবেশকারী ইরাবতী, শতদ্রু ও বিপাশা নদীতে কোনও স্থাপনার কাজ করতে পারবে না ভারত৷ একইসঙ্গে কাশ্মীর হয়ে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে প্রবাহিত হওয়া সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগায় পাকিস্তানের পানি ব্যবহারের অধিকার বেশি৷ এই ছয় মূল নদ-নদী দুইদেশে প্রবাহমান৷
এদিকে পানি সংকট ও ছয় দশক ধরে চলমান কাশ্মীর সংকট একসঙ্গেই মাথাচাড়া দিচ্ছে৷ দুই দেশই পুরো কাশ্মীর উপত্যকার দাবিদার এবং আংশিকভাবে সেটি শাসন করছে৷
তবে ইতোমধ্যে ভারতের প্রতি চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে পাকিস্তান৷ ভারত পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে এবং চন্দ্রভাগায় বাঁধ নির্মাণ করেছে৷
ইসলামাবাদ চেম্বার অব কমার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৫১ সালে পাকিস্তানে জনপ্রতি ৫ হাজার ২৬০ ঘনমিটার পানি বরাদ্দ ছিল৷ ২০১৫ সালে এটি ৯৪০ ঘনমিটারে নামে৷ ২০২৫ সালে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৮৬০ ঘনমিটার৷
অন্যদিকে, ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, ১৯৫১ সালে ভারতে জনপ্রতি ৫ হাজার ১৭৭ ঘনমিটার পানি বরাদ্দ ছিল, ২০১৫ সালে সেটি ১৪৭৪ ঘনমিটারে নামে এবং ২০২৫ সালে এটি ১৩৪১ ঘনমিটার হবে৷
জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ক্লাইমেট নেক্সাসের নির্বাহী জেফ নেসবিট বলেন, ‘‘পানি চুক্তি রয়েছে এ দু'দেশের৷ সীমান্তবর্তী অন্যান্য সংকট সম্বলিত পাশাপাশি দু'টো দেশের পারমাণবিক সক্ষমতা থাকা ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে৷''
জেফ নেসবিট আরও বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে দুই দেশের ভৌগলিক অবস্থানকেও৷ কারণ পাকিস্তানের জন্য সিন্ধু পানির মূল উৎস৷ একইসঙ্গে দেশটির ৯০ ভাগ কৃষি এই নদীর ওপর নির্ভরশীল৷'' সুতরাং তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংকট আসন্ন৷ এটিকে মোকাবেলা করতেই সচেষ্ট থাকতে হবে৷
মেলানি হল/এফএ