1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভুল সংশোধনের উদ্যোগ

১১ জানুয়ারি ২০১৭

নতুন পাঠ্যপুস্তকে ভুলের ঘটনায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার৷ এরই মধ্যে এনসিটিবি-র দুই কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে৷ একজন আর্টিস্ট কাম ডিজাইনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷ এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী ভুল সংশোধনের অঙ্গীকার করেছেন৷

https://p.dw.com/p/2VbfX
বাংলাদেশের পাঠ্যবই
ছবি: bdnews24.com

নতুন বছরের পাঠ্যবইয়ে বেশ কিছু ভুলের কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে৷ এর মাঝেই সোমবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবি-এর দুই কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়৷ মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আর্টিস্ট কাম ডিজাইনার সুজাউল আবেদীনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে এনসিটিবি৷ এছাড়া পাঠ্য পুস্তকের ভুল-ক্রটি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি করেছে এনসিটিবি৷ এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও আলাদা একটি তদন্ত কমিটি করেছে৷

প্রথম শ্রেণির বাংলা বইয়ে ‘শুনি ও বলি' পাঠে একটি ছাগলের ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, অজ (ছাগল) আসে৷ আম খাই৷ অপ্রচলিত ‘অজ' শব্দের ব‌্যবহার সমালোচনার জন্ম দিয়েছে৷ আবার আম খাওয়া বোঝাতে একটি আম গাছের নিচের অংশে দুই পা তুলে একটি ছাগলের দাঁড়িয়ে থাকায় ছবি দেওয়া হয়েছে সেখানে৷ এই ছবি নিয়ে কেউ কেউ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ছাগল নাকি গাছে উঠে আম খায়?'

তবে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে ওই ছবিটি বিকৃত করেও সমালোচনা চলছে ৷ তিনি ফেসবুকে শেয়ার করা গাছের উপর ছাগল দেখানো একটি ছবি নিয়ে আসেন সংবাদ সম্মেলনে৷ সেই ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বইয়ের সাত পৃষ্ঠায় যে ছবি আছে তাতে দেখবেন….অনেক গাছ আছে, ফলের গাছ আছে সে রকম একটা গাছ দেখানো আছে, সেখানে একটি ছাগল পা তুলে দিয়েছে, ছাগল পা তুলে দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করে৷ ছোট আম গাছ, গাছে উঠেনি৷''

পাঠ্যপুস্তকে ভুলের ঘটনায় গত সোমবার এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক প্রীতিশ কুমার সরকার এবং ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ লানা হুমায়রা খানকে ওএসডি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দোষ প্রমাণ হলে দোষীদের পরিপূর্ণ শাস্তি হবে৷

গত ১ জানুয়ারি ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ২০১ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে সরকার৷ নতুন পাঠ্যবইতে যেসব ভুল এবং অসঙ্গতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে সেগুলো হলো –

১. প্রথম শ্রেণির বাংলা বইয়ে বর্ণ পরিচয়ে লেখা হয়েছে, ‘ও'-তে ওড়না চাই৷

২. একই বইয়ে শুনি ও বলি পাঠে একটি ছাগলের ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, অজ (ছাগল) আসে৷ আম খাই৷ আম খাওয়া বোঝাতে একটি আম গাছের নিচের অংশে দুই পা তুলে একটি ছাগলের দাঁড়িয়ে থাকায় ছবি দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে ফেসবুকে চলছে হাস‌্যরস৷

৩. তৃতীয় শ্রেণির একটি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির নিচে ইংরেজিতে একটি বাক্য লেখা হয়েছে ভুল বানানে৷ আঘাত করা বোঝাতে গিয়ে ‘হার্ট' বানান ভুলভাবে লেখা হয়েছে৷

৪. তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ে কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে' কবিতায় বেশ কয়েকটি লাইন বিকৃত করা হয়েছে৷

৫. অষ্টম শ্রেণির গল্পের বই আনন্দপাঠে সাতটি গল্পের সবগুলোই বিদেশি লেখকের গল্পের বাংলা অনুবাদ৷ দেশি লেখকের কোনো গল্প সেখানে না থাকায় সমালোচনা হচ্ছে৷

৬. হুমায়ূন আজাদের ‘বই' কবিতাটি বাদ দেয়া৷

শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘শব্দ ও বানান ভুল হতেই পারে, সেটা ভিন্ন বিষয়৷ কিন্তু আদর্শ ছেলে কবিতায় যে ভুল হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না৷''

এদিকে, পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় বৈষম্যমূলক বিষয় অন্তর্ভুক্তি এবং গুরুত্বপূর্ণ ও প্রগতিশীল লেখকদের লেখা বাদ দেওয়াসহ নানা অসংগতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ৮৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি৷ তাঁদের অভিযোগ, এ বছরের পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক অপ-রাজনীতির সঙ্গে সরকারের আপসরফার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হয়েছে৷ অবিলম্বে ভুলে ভরা পাঠ্যবইগুলো প্রত্যাহার ও নবীন শিক্ষার্থীদের সাম্প্রদায়িক ও কূপমণ্ডূক হওয়ার হাত থেকে রক্ষার দাবি জানান তাঁরা৷ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা এই দাবি জানিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেন৷

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন আহমেদ রফিক, কামাল লোহানী, যতীন সরকার, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, হায়াৎ মামুদ, সৈয়দ হাসান ইমাম, হাসান আজিজুল হক, সনৎ কুমার সাহা, অজয় রায়, সফিউদ্দিন আহমদ, কাজী মদিনা, আবুল মোমেন, রামেন্দু মজুমদার, দ্বিজেন শর্মা, মামুনুর রশিদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, কবি আসাদ চৌধুরী প্রমুখ৷

এপিবি/এসিবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য