ছত্রাকের জীবনরহস্য উম্মোচন
২০ সেপ্টেম্বর ২০১২বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা আবারো সাড়া জাগিয়েছেন৷ পাটসহ পাঁচ শতাধিক উদ্ভিদের বিধ্বংসী রোগ সৃষ্টিকারী ছত্রাকের জীবনরহস্য আবিষ্কার করেছেন তাঁরা৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার জাতীয় সংসদে গর্বের সঙ্গেই জানান সেকথা৷ বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সংসদে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘এত দিন বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে তাদের উদ্ভাবনগুলো নিয়েছে, এখন বাংলাদেশ থেকে বিশ্ববাসী জ্ঞান নেবে৷ এটি একটি বিরাট অর্জন৷ বাংলাদেশ যে বিশ্বকে দিতে পারে, সেটা আজ প্রমাণিত হলো৷''
বিজ্ঞানীদের এই উদ্ভোবনের ফলে পাটসহ ৫০০ প্রজাতির উদ্ভিদকে ক্ষতিকর ছত্রাকের হাত থেকে রক্ষা সম্ভব হবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে৷ শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেন, ‘‘পাঁচ সদস্যের একটি বিজ্ঞানী দল এই ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন৷ আর বিজ্ঞানী দলের নেতৃত্বে ছিলেন অধ্যাপক মাকসুদুল আলম৷''
বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ‘ড. মাকসুদুল আলম একজন জিনতত্ত্ববিদ৷ তাঁর নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডাটাসফটের একদল উদ্যমী গবেষকের যৌথ প্রচেষ্টায় ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে সফলভাবে উন্মোচিত হয় পাটের জিন নকশা৷'
এদিকে, ছত্রাকের জীবন রহস্য উন্মোচনের পর দৈনিক প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক মাকসুদুল আলম জানান, ‘‘জেনোম গবেষণা অন্য আর দশটা গবেষণার মতো নয়, এটি একটু ভিন্ন ধরনের৷''
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘‘আমরা পাঁচ বছরের কাজ এক বছরে শেষ করে এনেছি৷ আপনি যদি সূত্রটা একবার ধরে ফেলতে পারেন, তা হলে বাকি কাজগুলো অনেক সহজ হয়ে যায়৷''
মাকসুদুল আলমের মতে, ‘‘এ ধরনের গবেষণার জন্য ‘কঠোর গোপনীয়তা' রাখা বাঞ্ছনীয়৷ আমরা সফলতার সঙ্গে তা করতে পেরেছি৷''
উল্লেখ্য, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে এই বিজ্ঞানীর৷ কাজের এসব অভিজ্ঞতা তিনি এখন নিজের দেশের জন্য কাজে লাগাতে চান৷ দৈনিক প্রথম আলোকে এই বিষয়ে মাকসুদুল বলেন, ‘‘আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতাগুলো অর্জন করেছি তার নির্যাস আমি আমার মাতৃভূমিকে দিতে চাই৷ আমি যে গবেষক দল তৈরি করেছি তাদের নিয়ে আমি আরও নতুন নতুন গবেষণা ও গবেষক তৈরি করতে চাই৷''
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ