1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিপাকিস্তান

পাকিস্তানে রাজনীতিবিদদের কথোপকথন ফাঁস কার স্বার্থে?

৪ অক্টোবর ২০২২

কয়েকজন রাজনীতিবিদের কথোপকথন ফাঁস হওয়া নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে পাকিস্তানে৷ এসব আলাপ গোপনে রেকর্ড করে অনলাইনে ছেড়ে দেয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷

https://p.dw.com/p/4HjL9
Pakistan | Imran Khan
ইমরান খান (ফাইল ফটো)ছবি: K.M. Chaudary/AP Photo/picture alliance

বলা হচ্ছে, সরকার ও বিরোধীদলের রাজনীতিবিদদেব সম্মানহানির উদ্দেশেই এমনটা করা হয়েছে৷ কিন্তু কারা এসব কথোপকথন জনসম্মুখে প্রকাশ করছে এবং এতে কারা লাভবান হচ্ছে?

আলাপ ফাঁসের ঘটনা এমন সময় ঘটল যখন পাকিস্তানের রাজনীতি টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷ এর ফলে সরকার ও বিরোধীদল উভয়েরই ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে৷

এ ধরনের তৎপরতাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ অভিহিত করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ কথোপকথন ফাঁস কিভাবে হচ্ছে তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ সম্প্রতি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার সহযোগীদের মধ্যে আলাপের অডিও ফাঁসের প্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেয়া হলো৷

ফাঁস হওয়া এসব অডিওতে ইমরান তার তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির নেত্রীবৃন্দদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার হাত বদলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কথিত চিঠি দেয়ার ব্যাপারটি কৌশলের সাথে সামলানোর পরামর্শ দেন৷ গত এপ্রিলে তার বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়৷ সে সময় ইমারন দাবি করেন, তার কাছে একটি চিঠি আছে যা প্রমাণ করে যে ওয়াশিংটন তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে চাচ্ছে৷

তবে শুধু ইরমানের অডিও ফাঁস হয়েছে তা নয়৷ গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের অডিও ফাঁসের ঘটনাও ঘটে৷ এমন এক অডিওতে এক আত্মীয়কে বিদ্যুতের প্রকল্প দেয়ার বিষয়ে শাহবাজকে কথা বলতে শোনা যায়৷ আরেকটি অডিওতে শোনা যায় তার ভাগ্নে মারিয়াম নেওয়াজ তাকে পূর্বের সরকারের একটি প্রকল্প বাতিলের অনুরোধ করছেন৷

বিশ্লেষকরা বলছেন, অডিও ফাঁসের জন্য শাহবাজ ও ইমরান একে অপরকে দায়ী করলেও এর ফলে সরকার ও বিরোধীদল সমানভাবে তাদের সম্মান হারাচ্ছে৷

পাকিস্তানের জনগনের ধারনা, রাজনীতিবিদরা যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় আসার জন্য অনেক বেশি আগ্রহী৷ ‘অডিও স্ক্যান্ডালও' তাদের এই ধারণাকেই সমর্থন করে৷ এ ধরনের ঘটনার মধ্য দিয়ে রাজনীতিবিদরা যে দুর্নীতিগ্রস্থ, স্বার্থপর এবং অযোগ্য এমন দাবিকেই শক্তিশালী করে বলে বিশ্বাস করেন করাচিভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক তাওসিফ আহমেদ খান৷

তবে অডিও ফাঁসের বিষয়টি রাজনীতিবিদদের ইমেজ ক্ষুণ্ণের পায়তারা বলে অন্য কয়েকজন বিশ্লেষকের ধারণা৷ তাদের একজন হলেন পিটিআই কর্মকর্তা জামশেদ ইকবাল চিমা৷ তিনি ডয়েচে ভেলেকে বলেন, এসব কাজ তারাই করেন যারা রাজনীতিবিদদের জনপ্রিয়তাকে ভয় পান৷

কিছু মানুষের অভিযোগ এসব অডিও ফাঁসের পেছনে আছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী৷

প্রাক্তন সংসদ সদস্য ও সেনাবাহিনীর সমালোচক বাশার গওহর বলেন, ‘‘রাজনীতিবিদদের ফোনে আড়িপাতার ঘটনা এটাই প্রথম না৷ ফোনে অবৈধভাবে আড়িপাতা নিয়ে আমি সংসদে অভিযোগ এনে বলেছি যে এসব গোয়েন্দা সংস্থার কাজ৷ রাজনীতিবিদদের ব্ল্যাকমেইল ও বেসামরিক সরকারকে দুর্বল করার জন্য এসব করা হয়৷''

তাওসিফ খানের মতে, এ ধরনের অডিও ফাঁসের ঘটনা পাকিস্তানে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হতে পারে যা পক্ষান্তরে ইসলামী দলগুলোর জন্য সুবিধাজনক হবে৷ তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে যতদিন না সব রাজনীতিবিদ এক হবে, ততদিন এই প্রবণতা থামবে না৷

তবে ইমরান ও শাহবাজের মধ্য যে দা-কুড়াল সম্পর্ক তাতে তারা দুইজন একে অপরের সাথে হাত মেলাবেন এমনটা অপ্রত্যাশিত৷

কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, সামরিক বাহিনীকে দোষ দেয়ার আগে রাজনীতিবিদদের উচিত তাদের নিজেদের সমস্যা দূর করা৷

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে অবসরপ্রাপ্ত মেজর ও সামরিক বিশ্লেষক ইজাজ আওয়ান ডয়েচে ভেলেকে বলেন, "সরকারের অযোগ্যতার কারণে অডিও ফাঁস হচ্ছে৷ নেওয়াজ শরীফের সময়েও এসব ঘটেছে৷ সে সময় তার সরকার ব্যবস্থা নিলে এসব আর ঘটত না৷''

একেএ/এফএস