পাকিস্তানে ধর্মনিন্দায় অভিযুক্ত খ্রিস্টান দম্পতি মুক্ত
৪ জুন ২০২১নিম্ন আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। কিন্তু সাফকত ইমানুয়েল মাসিহ এবং সুগুফা কৌসর মাসিহকে মুক্তি দিল উচ্চ আদালত। সাত বছর ধরে আইনি লড়াইয়ের পর। ইইউ-ও তাদের মুক্তির জন্য পাকিস্তানকে চাপ দিয়েছিল।
ওই খ্রিস্টান দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা মুসলিম সহকর্মীদের এমন মেসেজ পাঠাতেন, যেখানে মহানবি(সাঃ)-র বিরুদ্ধে অপমানজনক কথা থাকত।
ওই দম্পতি জানিয়েছেন, তারা নিরক্ষর। তাদের দাবি ছিল, মুসলিম সহবকর্মীরাই তাদের ফাঁদে ফেলেছিলেন। তাদের সঙ্গে সহকর্মীদের কাজ নিয়ে গোলমাল হয়েছিল। তারপর তাদের পরিচয়পত্র চুরি করা হয়। সেটা দেখিয়ে তাদের নামে সিম কার্ড কেনা হয় এবং সেখান থেকে মেসেজ পাঠানো হয়। যখন এই কাণ্ড হয়েছে, তখন সিম পাওয়ার জন্য আবেদণকারীর বুড়ো আঙুলের ছাপ দেয়ার দরকার ছিল না পাকিস্তানে।
ইইউ কী বলছিল
গত এপ্রিলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা ধর্মনিন্দার দায়ে শাস্তির সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওযায় চিন্তা প্রকাশ করেন। এই খ্রিস্টান দম্পতির উপর অভিযোগ নিয়ে সদস্যরা বলেছিলেন, তথ্যে প্রচুর গলদ আছে। অবিলম্বে নিঃশর্তে মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাহবার করা উচিত।
বৃহস্পতিবার দম্পতির আইনজীবী সইফুল মালোক বলেছেন, তার আশা, এক সপ্তাহের মধ্যে দম্পতি মুক্তি পাবেন।
কেন এই মামলা গুরুত্বপূর্ণ
পাকিস্তানে ধর্মনিন্দা খুবই গুরুতর অপরাধ। ধর্মনিন্দার গুজব থেকেই সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ওই দম্পতি ও তাদের চার সন্তান লাহোরের পশ্চিমে গোজরাতে থাকতেন। ২০০৯ সালে একটি পবিত্র কোরান নিয়ে গুজবকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টান বসতি এলাকা আক্রান্ত হয়। নয়জন মারা যান।
এই দম্পতির আইনজীবী এর আগে আসিয়া বিবির মামলাও লড়েছিলেন। সেই মামলাও পশ্চিমা দেশগুলিতে আলোড়ন ফেলেছিল। তারপর তার শাস্তি মকুব হয়। সেটা নিয়ে চরমপন্থিরা প্রতিবাদ দেখায়। আসিয়া বিবি ক্যানাডা চলে যান।
ধর্মনিন্দার দায়ে পাকিস্তানে এখন ৮০ জন জেলে। তাদের মধ্যে অর্ধেকের হয় মৃত্যুদণ্ড হয়েছে বা যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
জিএইচ/এসজি(এএফপি, রয়টার্স, ইপিডি)