পশ্চিমের বিরুদ্ধে এককাট্টা হতে পারে চীন-রাশিয়া
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে শি জিনপিংয়ের উজবেকিস্তান সফরের কথা থাকলেও পুটিনের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ নেই৷ তবে এসসিওর আট সদস্যের মধ্যে রাশিয়া রয়েছে৷ এবং সম্মেলন উপলক্ষ্যে পুটিন উজবেকিস্তান যাচ্ছেন৷ চীন ও রাশিয়া ছাড়া এসসিওর বাকি সদস্যরা হচ্ছে কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ভারত ও পাকিস্তান৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন৷
সম্মেলনে যোগ দিতে করোনার শুরুর পর প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং৷ এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরুর কিছুদিন আগে চীনে শি জিনপিং ও পুটিনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে৷ সেইসময় তারা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ‘কোনো নির্দিষ্ট সীমা না থাকার' কথা উল্লেখ করেছেন৷
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছে৷ এই অবস্থায় চীন রাশিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷ রাশিয়ার জ্বালানি কিনে রাশিয়াকে আর্থিক সমর্থনও দিয়ে যাচ্ছে চীন৷ এছাড়া রাশিয়ায় গাড়ি ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করছে চীন৷
আবার তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে পশ্চিমের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হলে রাশিয়া চীনকে সমর্থন জানায়৷
এই অবস্থায় উজবেকিস্তানে বৈঠক করে চীন ও রাশিয়ার নেতা পশ্চিমের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার সংকেত দিতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
তাইওয়ানের ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি রিসার্চের মধ্য এশিয়া বিশেষজ্ঞ চিয়েন-ইয়ু শিহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, পশ্চিমের সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার উত্তেজনা দেশ দুটির মধ্যে সহযোগিতা বাড়াবে৷
কিরঘিজস্তানের থিংক ট্যাংক ওএসসিই একাডেমির সিনিয়র রিসার্চার নিভা ইয়াও বলছেন, পশ্চিমের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক অর্ডারে পরিবর্তন আনতে চায় রাশিয়া ও চীন৷ সে কারণে দেশ দুটির মধ্যে জোট তৈরি হচ্ছে৷ তবে এক্ষেত্রে চীন একটি বিষয় অনুধাবন করতে পারছে না বলে মনে করেন ইয়াও৷ তিনি বলেন, ‘‘চীন যেটা বুঝছে না সেটা হচ্ছে রাশিয়ার লক্ষ্য পশ্চিমকে টেনে নামানো নয়, বরং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ফিরিয়ে আনা৷'' উজবেকিস্তান, কাজাখস্তানের মতো দেশগুলো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল৷ তাই রাশিয়া তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে চায়৷ আবার চীনও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চায় কারণ চীনের প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে উজবেকিস্তান, কাজাখস্তানসহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর গুরুত্ব রয়েছে৷
তবে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো আরব বিশ্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে চাইছে৷ কারণ ইউক্রেন ও তাইওয়ানকে ঘিরে শুরু হওয়া উত্তেজনার জন্য তারা চীন কিংবা রাশিয়ার উপর খুব বেশি নির্ভরশীল হতে চাইছে না৷
উইলিয়াম ইয়াং, তাইপে/জেডএইচ